‘এখনো বেঁচে আছি, এটাই তো বড় কথা’

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৪

‘জীবনে কোনোদিন এতো পানি দেখেনি, বিভিন্ন জায়গায় বন্যা হতো শুনতাম। এবার নিজের ঘরে গলা সমান পানি। অনেক কষ্টে নাতীদের নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। পানিতে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছে, এখনো বেঁচে আছি এটাই তো বড় কথা।’

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বাড়ি ছাড়েন সুরেজ জাহান। সোমবার (২৬ আগস্ট) মিরসরাইয়ের মিঠাছরা উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে এসব কথা বলছিলেন তিনি।

সুরেজ জাহান বলেন, ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হয়েছে, কিন্তু এতো পানি দেখিনি। অন্যান্য সময় নদী পাড়ের এলাকায় পানি উঠলেও আমাদের এলাকায় ওঠেনি। এবার ভয়াবহ অবস্থা, প্রথমে কোমর সমান পানি, পরে দেখি গলা সমান। ঘরে বন্দি হয়ে পড়ি, অনেক কষ্টে কয়েকজন মিলে নৌকা দিয়ে আমি, আমার স্বামী ও নাতীদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। চারদিন ধরে মিঠাছরা স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছি। ঘরের কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই। সব শেষ হয়ে গেছে। পানি কমলে বাড়ি গিয়ে কী করবো? এই ঘরে কীভাবে থাকবো, কি খাবো?

সুরের জাহানের স্বামী নুরুল ইসলাম বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রেও আর মন টিকছে না। নিজের বাড়ি চলে যেতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু এখনো পুরোপুরি পানি নামেনি। গিয়ে তো থাকতে পারবো না। বাধ্য হয়ে আরও দু-একদিন থাকতে হবে মনে হচ্ছে।

মিঠাছরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামশেদ আলম বলেন, গত চারদিন ধরে স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২৫০ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। তার মধ্যে আজ সকালে ২০-২২ জন বাড়ি চলে গেছেন। শুরুতে কয়েক বেলা আমি তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। পরে উপজেলা প্রশাসন, বিএনপি, জামায়াত নেতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা খাবারের ব্যবস্থা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরসরাইয়ে টানা পাঁচদিন বন্যায় পানিবন্দি ছিল প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষ। এখানকার ১১টি ইউনিয়ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

প্রথম দিকে ফেনী নদীর তীরবর্তী করেরহাট, হিঙ্গুলী, ধুম, ওচমানপুর ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হলেও ২৪ আগস্ট রাত থেকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। তবে সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় পানি কমছে, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে।

এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।