হবিগঞ্জে সাড়ে ১৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২৪

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে। পানিবন্দি অন্তত ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার। এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে নদ-নদীর পানি।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের বেশ কয়েকটিতে উঠেছেন বন্যাকবলিত পরিবারগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে হবিগঞ্জে প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। জেলার সীমান্তবর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেও প্রবল বর্ষণ হয়। বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার খোয়াই, করাঙ্গি, কুশিয়ারা, ভেড়ামোহনাসহ অন্যান্য নদীর পানি বেড়ে গেছে। বুধবার থেকে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।

হবিগঞ্জে সাড়ে ১৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি

এদিকে, জেলা সদরে শহরতলীর জালালাবাদ এলাকায় খোয়াই নদীর বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে রিচি, জালালাবাদ, ছোট বহুলা, সুলতান মাহমুদপুর, নোয়াগাঁওসহ আশপাশের গ্রামগুলো। ডুবে গেছে হাওরের বিস্তীর্ণ আমন ধানের জমি। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৫৬০ জন মানুষ। তাদের অনেকেই পরিবার পরিজন এবং গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র উঠেছেন।

আরও পড়ুন:

রিচি গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল হাই বলেন, রিচি, লুকড়া, জালালাবাদ, সুলতান মাহমুদপুর, ছোট বহুলাসহ আমাদের এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের হাওরে মানুষ আমন ধান রোপন করেছিলেন। কিন্তু খোয়াই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জালালাবাদের কাছে বাঁধের ভাঙন দিয়ে পানি এসে সব তলিয়ে নিয়ে গেছে। অনেকেই ঋণ করে জমি আবাদ করেছিলেন। সবকিছু হারিয়ে দিশেহারা এসব মানুষ।

সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. রইছ আলী বলেন, নদীর বাঁধ ভাঙার ফলে ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের অসংখ্য বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান, চাল পর্যন্তও পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন তারা কীভাবে চলবে। কী খাবে।

হবিগঞ্জে সাড়ে ১৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি

রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া উমরা খাতুন বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) হঠাৎ করে বাড়িঘরে পানি এসে ঢুকতে থাকে। সকালে ভেজা কাপড়সহ স্কুলে এসে আশ্রয় নিই। একরাত ভয়ে ঘুমাতে পারিনি। বৃহস্পতিবার সারাদিন কিছু খাইনি।

হাছেনা খাতুন নামে আরেকজন বলেন, আমাদের বাড়িঘর আছে। কিন্তু কী হবে। পানিতে সব ডুবে গেছে। তাই গরু, ছাগলসহ বাড়ির সবাই স্কুলে এসে আশ্রয় নিয়েছি।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সুমি রাণী বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে পড়ে ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আছেন ৫৭ হাজার ৫৬০ জন। তাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে ১২৫টি।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।