পানির তোড়ে ৮ স্থানে ভেঙেছে সড়ক, আখাউড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২৪

অবনতি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবারও ভারতীয় সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় পানি বেড়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙার ফলে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে অন্তত ৬০০ পরিবার। উদ্ধারের অপেক্ষায় আছেন তারা। দুপুর নাগাদ মাত্র ১০০টির মতো পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পেরেছেন।

এদিকে উপজেলার আটটি স্থানে এলাকাভিত্তিক সড়ক ভেঙে গেছে। এতে এলাকায় যেমন পানি ঢুকছে তেমনিভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইটনা এলাকার তিনটি ও খলাপাড়া এলাকার দুটিসহ মোট আটস্থানে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজির খালসহ বিভিন্নস্থানে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। এখন যে পানি আছে এর আরও ৩০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি ধারণা দেন। ফলে আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

ভারী বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় মঙ্গলবার রাত থেকে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ পরিবার। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাকসবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের। বৃহস্পতিবার আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। বন্ধ রয়েছে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক যোগাযোগ। স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার এখনো বন্ধ।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সকাল থেকে বন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ৩৪টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। বন্ধ হয়ে পড়ে বন্দরের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার। নতুন করে খলাপাড়া, ইটনা, রাজেন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।

এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাক-সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, বাধের অংশ ভেঙে প্লাবিত এলাকা বেড়ে যায়। এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সড়কের আটটি অংশ পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/জেডএইচ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।