সাবেক প্রতিমন্ত্রী চুমকিসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক দুই উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার সাবেক মেয়র, জেলা পরিষদের সদস্য ও দায়িত্বরত চারজন ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১১৪ নেতাকর্মীর নামে হত্যা এবং মারধরের অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। বুধবার এই মামলাগুলো হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন।
এজাহারে বলা হয়, ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে কালীগঞ্জ উপজেলার ইসমাইল হোসেনসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা বালীগাঁও বাইপাস সড়কে মিছিল করছিলেন। এসময় মেহের আফরোজ চুমকির নির্দেশ অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে জখম করেন।
এ ঘটনায় ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ আওয়ামী লীগের ৬৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৩৫-৪০ জনের বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে হুকুম প্রদান, মারধর, গুরুতর জখম ও হুমকির অভিযোগে মামলা করেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মাজেদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সদস্য সফিকুল কাদের, বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহমেদ, জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ মোড়ল, কালবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আহমেদুল কবির, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, কাউন্সিলর আমির হোসেন খাঁ, আশরাফুল আলম, বাদল হোসেন, তুমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন।
অপরদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান শেখ বাদী হয়ে মেহের আফরোজ চুমকিসহ আওয়ামী লীগের ৪০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ মে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যুবদলের সম্মেলনে যাওয়ার সময় মেহের আফরোজ চুমকির নির্দেশে অন্য আসামিরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দিতে মারধর করেন। সে সময় বিকল্প পথ হিসেবে শীতলক্ষ্যা নদীপথে ট্রলারে করে সম্মেলনে যাওয়ার সময় দুপুর ২টার দিকে কালীগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় আসামিরা বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ট্রলারে আক্রমণ করে। সে সময় ট্রলারে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা আহত হন।
এরমধ্যে যুবদল কর্মী জামির হোসেনকে (৪০) মারধর করে ট্রলার থেকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
এছাড়া যুবদলের আরেক কর্মী নাঈম হোসেনের (২০) মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে আহত করে ট্রলার থেকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ৭ মে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে জমির ও নাঈমের লাশ উদ্ধার করে।
অপরদিকে বাদীগাঁও এলাকার শরিফ মিয়া বাদী হয়ে যুবলীগ সভাপতি ও কাউন্সিলর বাদল হোসেন, তার ভাই এনামুল হক, আলম ভূঁইয়াসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনা হয়।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/জেআইএম