প্লাবিত চৌদ্দগ্রাম

হাসপাতালে বন্যার পানি, রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৪

টানা তিন দিনের বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। পানি ঢুকেছে হাসপাতাল, সরকারি অফিস এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের বাসাবাড়িতে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। হাসপাতালে পানি ওঠায় সেবা দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা। ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।

জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন খাল ও ডাকাতীয়া নদীতে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ শিকারের ফাঁদ বসানো হয়েছিল। এতে গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির চাপে পৌরসভাসহ ১৩ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সঙ্কট।

হাসপাতালে বন্যার পানি, রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায়

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি প্রবেশ করায় জরুরি ও বহির্বিভাগে কোনো চিকিৎসক নেই। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। তবে হাসপাতাল আঙিনায় বুক সমান পানি থাকায় অনেকেই আটকা পড়েছেন হাসপাতাল ভবনে। বিকল্প ব্যবস্থায় কেউ কেউ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন।

অপরদিকে উপজেলা পরিষদে পানি প্রবেশ করায় বন্ধ রয়েছে নাগরিক সেবা। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে পুকুর, ডোবাসহ বহু মাছের প্রজেক্ট। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হবেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। পানিতে তলিয়ে গেছে আঞ্চলিক সড়কগুলো।

হাসপাতালে বন্যার পানি, রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায়

রিমি পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মিজানুর রহমান টিটু জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার পানি আমার দুইটি পোল্ট্রি ফার্মে প্রবেশ করায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা মূল্যের লেয়ার মুরগি মারা গেছে। ভেসে গেছে বহু মুরগি। এই ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে উঠবো বুঝে উঠতে পারছি না।

কে এম ফিশারিজের মালিক মো. খোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার পানিতে আমার দুইটি দীঘি ও তিনটি পুকুর ভেসে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। দুই দিনের বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে কল্পনাও করতে পারিনি। উপজেলায় আমার মতো আরও বহু মৎস্য ব্যবসায়ীর মাছ পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

হাসপাতালে বন্যার পানি, রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায়

গুণবতী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল জাগো নিউজকে বলেন, বন্যায় গুণবতী ইউনিয়নের সকল গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুক সমান পানি। যার কারণে জরুরি ও বহির্বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারগুলোতে পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসকরাও ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে ভর্তিকৃত সকল রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালে বন্যার পানি, রোগীদের ছাড়পত্র দিয়ে বিদায়

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জাগো নিজকে বলেন, টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির কারণে সমগ্র উপজেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির ঠিক পরিসংখ্যান নিচ্ছি।

জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।