প্রেমিকা নিয়ে উধাও ছেলে, অপহরণ মামলায় বাড়িছাড়া বাবা-মা

আরিফ উর রহমান টগর আরিফ উর রহমান টগর টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১২:২৪ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৪

প্রেমিকাকে নিয়ে উধাও ছেলে। আর অপহরণ মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার এড়াতে ঘরছাড়া বাবা-মা। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চিনামুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশি হয়রানি আর গ্রেফতারের ভয়ে প্রায় তিনমাস যাবৎ বাড়িছাড়া ছেলে অন্তরের বাবা সিএনজি চালক আব্দুল কাদের আর মা কহিনুর বেগম। ওই মামলায় প্রতিবেশী ভ্যানচালক আয়নাল মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগমও আসামি হয়ে বাড়িছাড়া হয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৩ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাদী উজালা বেগমের মেয়ে ও বানিয়াফৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাছলিমা জান্নাত সাদিয়া প্রাইভেট পড়ে আসার পথে সাদা মাইক্রোবাসযোগে তাকে অপহরণ করেন এলেঙ্গা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চিনামুড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে অন্তর (২০)। অপহরণকালে ওই ছাত্রীর গলায় ১ ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিল। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ টাকা।

তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রেমের টানে ছেলে-মেয়ে এবার নিয়ে দ্বিতীয় দফায় উধাও হলো। ঘটনাটি কোনো অপহরণ নয়। মেয়ে নিজ ইচ্ছায় ছেলের সঙ্গে ঘর সংসার করতে পালিয়েছে। এর আগেও স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে মেয়েকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় একটি আপসনামাও করা হয়েছিল। তাতে লেখা হয়েছিল যদি পরবর্তীতে ওই মেয়ে আবার ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার কোনো মামলা করবে না। কিন্তু শর্ত অমান্য করে হয়রানি করতে মেয়ের পরিবার অপহরণ মামলা করেছে।

স্থানীয় মাতব্বর বাতেন সরকার ও আলীম সরকার বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে ওই দুই ছেলে-মেয়ে পালিয়ে যায়। এর ছয়দিন পর তাদের উদ্ধার করা হয়। উভয় পরিবারের সম্মতিতে ও লিখিত আপসনামার মাধ্যমে মেয়েকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আপসনামায় ওই মেয়ে যদি আবার ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার কোনো মামলা মোকদ্দমা করতে পারবেন না বলে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন।

৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বাবুল খান বলেন, অর্থবিত্ত আর সামাজিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় মেয়ের পরিবার লিখিত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে মামলাটি করেছে। এটি অপহরণ নয়, প্রেমঘটিত বিষয়। এরপরও আমরা মেয়েকে আবার ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি। তবে ওই পরিবার মেয়েকে ফিরিয়ে না নিয়ে মামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল কাদের বলেন, ওই মেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে পালিয়েছে। আমরা ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। এরআগেও ওই মেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে পালিয়েছিল। আমাদের হয়রানি করতে তাদের পালানোর ঘটনাকে অপহরণ সাজিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার ভয়ে এখন আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

সাদিয়ার চাচা শাহজাহান বলেন, গ্রাম্য সালিশে বসতে রাজি হইনি। আইনে যেটি হবে সেটিই আমরা মেনে নেবো।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি পরিদর্শক জামান জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ভিকটিম উদ্ধারের তৎপরতা চলমান আছে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।