ভারী বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরীতে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি চরমে
মাত্র একদিনের বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরীতে জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে নগরীর প্রধান সড়কগুলো। পানি ঢুকেছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ মানুষের বাসাবাড়িতে। এতে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর প্রধান সড়ক সালাউদ্দিন মোড়, সরদর হাসপাতাল সড়ক, টমছম ব্রিজ নিউ হোস্টেল এলাকা, নজরুল অ্যাভিনিউ সড়ক, কুমিল্লা স্টেডিয়াম সড়ক, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড এলাকা, নগরীর দক্ষিণ ও উত্তর চর্থা, পুলিশ লাইনস, রেসকোর্স, ঠাকুরপাড়া, শাকতলা, ধর্মপুর, ছায়া বিতান এবং চকবাজার থেকে কাপড়িয়াপট্টিসহ নগরীর বিভিন্ন সড়ক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন নগরবাসী।
কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুর জাগো নিউজকে জানান, রোববার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে লঘুচাপের কারণে অসংখ্য মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আরও কয়েকদিন ভারী ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পানিতে সড়কে জলাবদ্ধার কারণে নগরীতে রিকশা ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। অতিরিক্ত পানির কারণে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নিচু এলাকায় চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে কদর বেড়েছে প্যাডেলচালিত রিকশার।
নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকায় বাসিন্দা মীর শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা পুরোনো একটি সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। গত ১২-১৩ বছরেও নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন করা গেলো না। দৃশ্যমান কী উন্নয়ন হয়েছে আমার জানা নেই?’
ছায়া বিতান এলাকার বাসিন্দা রাব্বি নামের এক যুবক বলেন, ‘কান্দিরপাড় থেকে আমাদের এলাকায় রিকশা ভাড়া নরমাল ৩০ টাকা। কিন্তু আজ জলাবদ্ধতার কারণে ৭০ টাকা দিয়ে আসতে হয়েছে। গত সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে আজ কুমিল্লা শহর পানিতে ভাসছে।’
কান্দিরপাড় এলাকায় কথা হয় বিশ্বরোড থেকে আসা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বরোড থেকে কান্দিরপাড় পর্যন্ত অটোরিকশায় নিয়মিত ভাড়া ২০ টাকা। বৃষ্টির কারণে সেটা ৩০ টাকা হয়ে গেছে। কী আর করবো! গন্তব্যে তো পৌঁছাতে হবে।’
উত্তর চর্থা এলাকার কালা মিয়া বলেন, ‘মাত্র একদিনের বৃষ্টিতে আমাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। ড্রেনের নোংরা পানি আর বৃষ্টির পানি এখন একাকার। শহরে আছে নাকি কোনো নদীর পাড়ে আছি বুঝে আসে না।’
সদর হাসপাতাল রোডের ফার্নিচার ব্যবসায়ী মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতে দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।’
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এএসএম