হামলার ৯ বছর পর চাচা-ভাতিজার নামে ছাত্রদল নেতার মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ১০:১১ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২৪
ছবি: সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৯ বছর পর হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মধ্যরাতে হাবিবুর রহমান সাদিদ বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সাবেক পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকে প্রধান আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে আজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাবেক এমপির ভাতিজা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক (৩৫), গুলশান পাড়ার মৃত সুন্নার ছেলে গালিব (৪০), মসজিদ পাড়ার ইদু শেখের ছেলে রেজু, হাসপাতাল পাড়ার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শুভ (৩৫), ঈদগাঁ পাড়ার দীন মোহাম্মদের ছেলে লিয়াকত আলীসহ (৪২) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদ চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবসা করেন। ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন চাঁদা দাবি করছিলেন। ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যবসা করতে হলে প্রতি বছর ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। ওইদিন তিনি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে হাত-পা ধরে মাফ চান। কিন্তু ওই টাকায় আসামিরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে তার ওপর অমানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।

তিনি বলেন, আসামিরা ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নির্দেশে তার বাড়িতে যান। এ সময় সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দার হাতে থাকা পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হন। আসামি গালিব চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ মারেন। গুরুতর রক্তাক্ত জখম হওয়ায় আমার মাথায় ৩০টি সেলাই লাগে। আসামি রেজু খুন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে আমার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করেন। আঘাতটি ডান হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে হাতও গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। যাতে ২৫টি সেলাই দিতে হয়। উক্ত আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে গেলে শুভ ও লিয়াকত তাদের কাছে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমার দুই পায়ে আঘাত করে। রক্তাক্ত জখম হওয়ায় আমার পায়ে ৫০টির ওপর সেলাই লাগে।

বাদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদ বলেন, ঘটনার পর আমার আঘাত গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ১নং আসামি রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন তৎকালীন পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার প্রভাবে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার নিতে অস্বীকার করে এবং আমি সন্ত্রাসীদের হুমকিতে দীর্ঘদিন এজাহার দায়ের করিতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করলাম।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে মামলা দায়ের করেছেন হাবিবুর রহমান সাদিদ৷ রোববার রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

হুসাইন মালিক/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।