চাঁদপুরেও সাবেক সচিব শাহ কামালের বহুতল ভবন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাওয়া যায়। এখানেই শেষ নয়, তার নিজ জেলা চাঁদপুরেও রয়েছে পাঁচতলা ভবন।

তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর প্রায় সময় এখানে এসে থাকতেন। সবশেষ চারদিন আগে রাতে গাড়ি নিয়ে এসে পুনরায় ঢাকায় চলে যান।

চাঁদপুর শহরের বনবিভাগ সড়কের খলিশাডুলি গ্রামে শাহ কামালের বাড়ি। ওই বাড়িসহ তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ। বাড়িটি পৌরসভার মধ্যে হলেও পুরো বাড়ির কোথায় পাওয়া যায়নি হোল্ডিং নম্বর। কৌশল করে তিনি হোল্ডিং নম্বর বসাননি। বাড়ির সামনেও নেই নামফলক।

শাহ কামালের বাড়ির উত্তরে আছে মো. নরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির বাড়ি। দক্ষিণে মো. আবুল বারী মিঞা ও শাহিনা আক্তারের বাড়ি। ওই বাড়ির পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর হচ্ছে ৯৯৭/৫। পূর্ব দিকে চাঁদপুর বনবিভাগের কার্যালয়।

খলিশাডুলি গ্রামের বাসিন্দা মজিদ পাটওয়ারীর বাবা ও আত্মীয়দের কাছ থেকে জমি কেনেন শাহ কামাল।

এ বিষয়ে মজিদ পাটওয়ারী বলেন, ২০ বছর আগে শাহ কামাল ও তার ভাই মাজহারুল আলমের নামে এই জমি কেনা হয়। তবে পরে এই সম্পত্তি নিজের এবং স্ত্রীর ফারজানা সিদ্দিকা জুঁইয়ের নামে লিখে নিয়েছেন শাহ কামাল। কিছুদিন আগে পাশের একটি জমিও কিনেছেন তার স্ত্রী নামে। বাড়ি নির্মাণ করার সময় আমি তার জমিতে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছি। ওই ভরাটের আড়াই লাখ টাকা দিয়েছেন সাবেক পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ। সচিবের কাছে আমি এখনো সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পাবো।

স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, শাহ কামাল চারদিন আগে রাত ১০টার দিকে গ্রামের বাড়ি আসেন।

খলিশাডুলি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী বলেন, এলাকায় এলে তিনি খুবই প্রভাব দেখাতেন। তার বাড়ির সামনের সড়কটিও দ্রুত পাকা হয়ে যায়। পাঁচতলা ভবনটি ২০১৬ সালে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে ভাড়া দেন তিনি। সমিতি তাকে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা দিতো। ওই অফিস চলে যাওয়ার পরে এখন খালি পড়ে আছে বাড়িটি।

সচিব শাহ কামালের বাবার নাম মো. মোজাহেরুল হক। গ্রামের বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলা দ্বাদশ ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামে। ৮ ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় তিনি। গ্রামের বাড়ি থাকেন তার বড় ভাই ডা. শাহজাহান। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এ বিষয়ে জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সাবেক সচিব মো. শাহ কামালের ব্যক্তিগত ৩টি নম্বরে কল দেওয়া হয়। তিনটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে শাহ কামালের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ৩ কোটির বেশি টাকা এবং ১০ লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।

শরীফুল ইসলাম/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।