ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র হস্তান্তর করলো সেনাবাহিনী

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৩:০৪ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৪

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানা থেকে লুণ্ঠন হওয়া বিপুল সংখ্যক অস্ত্র উদ্ধারের পর পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী।

শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় স্থানীয় সরকারি হাজী আসমত কলেজে সেনাবাহিনী ক্যাম্পের অপারেশন কমান্ডার মেজর মো. সানজেদুল ইসলাম ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলামের কাছে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো বুঝিয়ে দেন। এ সময় সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাম্প কমান্ডার লে. কর্নেল ফারহানা আফরিনসহ সেনাবাহিনীর ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র হস্তান্তর করলো সেনাবাহিনী

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে সন্ধ্যায় ভৈরব থানায় কয়েক হাজার দুর্বৃত্ত ও দুষ্কৃতকারী হামলা চালায়। এ সময় থানায় কর্মরত ওসিসহ সকল পুলিশ পালিয়ে যায়। এদিন থানায় দুর্বত্তরা আগুন লাগানোসহ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যায়। তারপর গত কয়েকদিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মীরাসহ জনতা বিভিন্ন স্থান ও লোকদের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে জমা দেয়। শনিবার উদ্ধারকৃত অস্ত্র থানা পুলিশের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

অস্ত্র বুঝিয়ে দেওয়ার সময় সেনাবাহিনীর ভৈরব ক্যাম্প অপারেশন কমান্ডার মেজর মো. সানজেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধার করার পর আজ পুলিশের নিকট বুঝিয়ে দিলাম। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্য ভৈরব ছাড়াও কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, ভৈরব বাজার পুলিশ ফাঁড়ি, ভৈরব রেলওয়ে, হাইওয়ে ও নৌ- থানার লুট করা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে। অন্যান্য থানার অস্ত্রগুলো পরে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রাইফেল, শর্টগান, স্টেনগান, চাইনিজ রাইফেল, গ্যাসগান ইত্যাদি রয়েছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশের মনোবল ভেঙে গিয়েছিল, এখন তারা সবাই কর্মস্থলে ফিরে এসেছে।

ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র হস্তান্তর করলো সেনাবাহিনী

তিনি আরও বলেন, ভৈরব থানাটি পুড়িয়ে দিয়ে লুট করার পর তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানীয় স্টেডিয়ামে থানার অস্থায়ী কার্যালয় গত ৯ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। অস্ত্র ছাড়া পুলিশ তাদের কার্যক্রম চালাতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে অস্ত্রের প্রয়োজন। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্য উদ্ধারকৃত অস্ত্র আজ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো। লুণ্ঠন করা বাকি অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার ১২ দিন পর আজ শনিবার আমরা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অধিকাংশ অস্ত্র বুঝে পেলাম। বর্তমানে ভৈরব থানার অস্থায়ী কার্যালয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।

 

ভৈরব সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাম্প কমান্ডার লে. কর্নেল ফারহানা আফরীন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল থানার কিছু পুলিশ সদস্যসহ অস্ত্র উদ্ধার করে। তার মধ্যে কিছু পুলিশ পালিয়ে যায় ও অধিকাংশ অস্ত্র লুট করে দুর্বত্তরা। ঘটনার পর থেকে ছাত্রজনতা ও শিক্ষার্থী কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাক্যাম্পে জমা দেয়। থানার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আজ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পুলিশের হাতে হস্তান্তর করলাম।

রাজীবুল হাসান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।