হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী আটক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ১২:৪৭ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২৪
ছবি: সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী

নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীকে আটক করেছে নৌবাহিনী। রোববার (১১ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে হাতিয়ার ওছখালীর নিজ বাসভবন থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। তবে তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক আলী অমিকে আটকের বিষয়টি গুজব।

নৌবাহিনী হাতিয়ার কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মুশফিকুর রহমান বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীকে আটক করেছে নৌবাহিনী। তার স্ত্রী-ছেলেতো কোনো অপরাধ করেননি। তাই তাদের আটক বা হেফাজতের বিষয়টি গুজব।

মোহাম্মদ আলীর ছোটভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন জাগো নিউজকে বলেন, নৌবাহিনীর সদস্যরা ভোরে বড়ভাইকে হেফাজতে নিয়ে গেছেন। তবে কী কারণে নিয়ে গেছেন তা বলেননি। মোহাম্মদ আলী অসুস্থ থাকায় সঙ্গে তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক আলী অমিও রয়েছেন।

মোহাম্মদ আলী গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নোয়াখালী-৬ হাতিয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।

এর আগে দুই মেয়াদে হাতিয়ার সংসদ সদস্য ছিলেন মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস। এছাড়া বিগত উপজেলা নির্বাচনে ছোটভাই মাহবুব মোর্শেদ লিটনকে বাদ দিয়ে ছেলে আশিক আলীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন মোহাম্মদ আলী।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলীর নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া মোহাম্মদ আলীর কাছে হাতিয়ার প্রায় সাত লাখ মানুষ জিম্মি হয়ে আছেন বলেও উল্লেখ করেন। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মোহাম্মদ আলীর গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করেন।

জানা গেছে, মোহাম্মদ আলী ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতিবিদ ছিলেন। পরে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলে। এরপর জাতীয় পার্টিতে। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থন নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে তিনি জাতীয় পার্টির সমর্থনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও ঋণখেলাপি হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হলে তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস স্বতন্ত্র নির্বাচন করে হেরে যান। আয়েশা ফেরদাউস ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। পরে গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আলী।

ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।