রাঙামাটিতে ছিনিয়ে নেয়া আসামিদের ফেরত দিল ছাত্রলীগ


প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

রাঙামাটিতে পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় তুলকালাম ঘটেছে। তবে পুলিশি তৎপরতা ও চাপের মুখে ছিনতাইয়ের দুই ঘন্টা পর ফের পুলিশকে আসামি ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে তুমুল বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে জানা যায়।
 
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি শহরে একটি মোটরবাইক চুরি যাওয়ার ঘটনায় করা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাত আনুমানিক প্রায় ১০টার দিকে শহরের কাঠালতলী এলাকা হতে কলিম উদ্দিন ও এরশাদ নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশের ভ্যানে করে কোতয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই সময় যাওয়ার পথে পুরাতন হাসপাতাল এলকায় একটি প্রাইভেট কার নিয়ে কমান্ডো স্টাইলে পুলিশের গাড়িটি গতিরোধ করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। যার নেতৃত্বে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন ও রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি বাপ্পাসহ অন্য সহযোগীরা।

এসময় দুই আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় তারা। পরে খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তৎপর হয় পুলিশ। কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল গিয়ে উপস্থিত হলে পুলিশের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলে বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত হন ছাত্রলীগ নেতারা। এক পর্যায়ে কড়া পুলিশি তৎপরতার মুখে রাত প্রায় ১২টার দিকে ছিনতাই করা আসামিদের পুলিশের হাতে ফেরত দিতে বাধ্য হন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
 
ওই সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহীদ উল্লাহ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল ঘটনাস্থল গিয়ে জেলা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বললে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছিনতাই করে নেয়া আসামিদেরকে ফের পুলিশের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে ছাত্রলীগ। পরে আসামি ছিনতাইয়ে ব্যবহার করা প্রাইভেট কারটি (চট্ট মেট্রো গ- ১২০২২৯) আটক করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহীদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে। পুলিশের কাজে যারা বাধা দিতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
 
রাঙামাটি কোতয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ওই মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক দুইজনের মধ্যে সঠিক তথ্য প্রমাণাদি না পাওয়ায় কলিম উদ্দিনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটক অপর ব্যক্তি এরশাদকে শুক্রবার আদালতে চালান দেয়া হলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন রাঙামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। তবে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন বলেন, পুলিশ যাদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীরা কথাবার্তা বলায় এক পর্যায়ে পুলিশ নিজেরাই আটকদের ছেড়ে দিয়েছে। আসামি ছিনতাইয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন সুজন।

রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বাপ্পা বলেন, ঘটনাটি আসলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছে। পরে তা সমাধান হয়েছে।

তবে ঘটনাটির বিষয়ে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন, ঘটনাটির সঙ্গে যারা জড়িত সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। পুলিশ যাদের আটক করে তারা ছাত্রলীগের কর্মী নন। আর সুজন এবং বাপ্পার কাজের দায়ভার ছাত্রলীগ বহন করবে না। পুলিশ দায়ীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এতে ছাত্রলীগ সহায়তা করবে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/ এমএএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।