বিএনপির মিছিলে ‘আওয়ামী লীগ নেতা’ বলায় সংঘর্ষ, নিহত ১
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নাহারুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাত দশটার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের আরও সাতজন আহত হয়েছেন।
নিহত নাহারুল ইসলাম বাওট গ্রামের কুরু বিশ্বাসের ছেলে। আহতদের মধ্যে নাহারুল ইসলামের প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম কালু (৫৫), তার ভাই সাবেক মেম্বার মহিবুল হক (৬০) এবং অপর ভাই হামিদুল হক (৫০) রয়েছেন। গুরুতর আহত কালুকে বামুন্দি থেকে মেহেরপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে নাহারুল ইসলামের এক ভাইসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামিদুল হক কালু এবং নাহারুল ইসলামের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মঙ্গলবার সকালে উত্তেজিত জনতা বাওট গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মাছ ব্যবসায়ী মাসুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এরপর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মহিদুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করতে যায়। মহিদুল ইসলাম নাহারুল ইসলামের চাচাতো ভাই। হামলাকারীদেরকে মহিদুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করতে নিবৃত্ত করেন নাহারুল ইসলামের পরিবারের লোকজন। এরপরে গাংনীর উদ্দেশ্যে বিএনপির বিজয় মিছিল বের করেন বাওট গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনতা।
ওই মিছিলে উপস্থিত হন নাহারুল ইসলামের পরিবারের লোকজন। নাহারুল ইসলামের ভাই বাওট বিদ্যালয়ের পরিচালক ইনামুল হক। এনামুলকে দেখে উত্তেজিত হন বাওট গ্রামের বিএনপি কর্মী উজ্জ্বল হোসেন। গেত দশ বছর এনামুল হক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং গ্রামে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। উজ্জ্বল এই অভিযোগ করলে দুজনের মধ্যে বেশ বাগবিতণ্ডা হয়।
এর জের ধরে এনামুলের পরিবার রাতে উজ্জলের মুদি দোকানে যান বিষয়টির প্রতিবাদ করতে। এনামুল এবং তার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দাবি করেন। অপরদিকে উজ্জ্বল দাবি করেন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আবারও বাগবিতণ্ডা এবং উত্তেজনার একপর্যায়ে উজ্জলের দোকানে ভাঙচুর করেন এনামুলের লোকজন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উজ্জলের পরিবারের লোকজন সাবেক মেম্বার কালুসহ কয়েকজন এনামুলের পরিবারের লোকজনের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজন রক্তাক্ত জখম হন। পরে স্থানীয়রা গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাহারুলের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারো দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকার লোকজন।
এদিকে মরদেহ নিয়ে এসে নাহারুলের বাড়িতে রাখা হলেও ঘটনাস্থলে যায়নি পুলিশ। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলেও গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ কেউ ফোন রিসিভ করেনি।
আসিফ ইকবাল/এফএ/এএসএম