হাওরে ধান কিনতে হিমশিম খাচ্ছে খাদ্য বিভাগ

লিপসন আহমেদ লিপসন আহমেদ , সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৪

এ বছর ধানের দাম কেজি প্রতি ২ টাকা বাড়িয়ে (১২৮০ টাকা মণ) সুনামগঞ্জে কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয় গত ৭ মে। কিন্তু লটারি নামক ভাগ্য পরীক্ষায় জয়ী হয়েও সরকারি খাদ্যগুদাম গুলোতে ধান দিতে অনাগ্রহী কৃষকরা। টানা দুই বছর ধরেই সুনামগঞ্জের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না খাদ্য বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে ১০ লাখ কৃষকের মুখে। জেলায় ধানের উৎপাদন বাড়লেও সরকার লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ ধান কিনছে। কিন্তু নামমাত্র এই ধানটুকুও কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে খাদ্য বিভাগকে।

কারণ হিসেবে কৃষকরা বলছেন, গুদামে ধান ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে গেলেও তাদের নানা ধরনের হয়রানিতে পড়তে হয়। সেইসঙ্গে সড়ক পথে কিংবা নৌপথে ধান নিয়ে গেলে যাতায়াত খরচ বেশি হয়। এতে লাভের অংশ কমে যায়।

হাওরে ধান কিনতে হিমশিম খাচ্ছে খাদ্য বিভাগ

শনির হাওরের কৃষক মফিজ মিয়া বলেন, কড়া রোদে ধান শুকিয়ে বস্তায় ভরে খাদ্য গুদামে নিয়ে গেলেও তারা বলে আমাদের ধান শুকানো হয়নি। আবারো শুকাতে হবে, না হলে ধান রাখবো না। এতে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। তাই গত দুই বছর ধরে ফড়িয়াদের কাছে ধান বিক্রি করি।

করচার হাওরের কৃষক রুহুল মিয়া বলেন, বছরে বছরে সুনামগঞ্জে ধান উৎপাদন বাড়ছে। চলতি বছর প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিকটনের ওপর ধান উৎপাদন হয়েছে কিন্তু সরকার কিনবে মাত্র ২৯ হাজার মেট্রিকটন ধান। তাও আবার লটারির মাধ্যমে। তাই এত আইনি মারপ্যাঁচে না পড়ে ফড়িয়াদের কাছে ধান বিক্রি করে দিয়েছি।

হাওরে ধান কিনতে হিমশিম খাচ্ছে খাদ্য বিভাগ

সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, চলতি মৌসুমে ধানের দাম বাড়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু তিন দফার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। পুরো আগস্ট মাস জুড়ে হাওরের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনবো। আশা করি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও খুব একটা পার্থক্য থাকবে না।

২০২৩ সালে এ জেলার কৃষকদের কাছ থেকে ১৭ হাজার ৪৮৩ মেট্রিকটন ধান কেনার কথা থাকলেও সরকার ১৫ হাজার ৫৫৪ মেট্রিকটন ধান কিনতে সক্ষম হয়।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।