চারতলার বারান্দায় কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় নাইমা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২৪
নিহত নাইমা সুলতানার রক্তাক্ত পোশাক হাতে স্বজনরা, ইনসেটে নাইমা

কী অপরাধ ছিল আমার মেয়ের? তাকে কেন নিজ বাড়ির বারান্দায় গুলিতে মরতে হলো? আমার মেয়ের আর ডাক্তার হওয়া হলো না। আমার মেয়ে বলে, ‘বাবা তুমি ডাক্তার, আমিও ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবো’।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ঢাকার উত্তরায় চারতলার বারান্দায় গুলিতে নিহত নাইমা আক্তার সুলতানার বাবা গোলাম মোস্তফা।

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৯ জুলাই উত্তরায় ৫ নম্বর সড়কে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছিল। সেখানে পুলিশ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ চলছিল। ওই সড়কের পাশেই একটি ভবনের চারতলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাইমা আক্তার সুলতানা। বারান্দায় শুকানো কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলি লাগে তার। সেখানেই লুটিয়ে পড়ে সে। পরে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ২০ জুলাই নাইমাকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন:

চারতলার বারান্দায় কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় নাইমা

নাইমা সুলতানার (১৫) গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার আমুয়াকান্দা গ্রামে। তার বাবা গোলাম মোস্তফা দেওয়ান একজন হ্যোমিও চিকিৎসক। মা আইনুন নাহার বেগম ও ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতো নাইমা। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল মেজ। বড় বোন তাসফিয়া সুলতানা ঢাকা মাইলস্টোন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়েন। ছোট ভাই আব্দুর রহমান ঢাকার উত্তরা এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।

নিহত নাইমার বাবা গোলাম মোস্তফা জানান, শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলের দিকে উত্তরার বাসার দিকে গোলাগুলি হচ্ছিল। নাইমা ওইসময় বারান্দায় কাপড় আনতে যায়। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সে লুটিয়ে পড়ে। নাক-মুখ থেকে রক্ত বের হতে থাকে। সেখান থেকে তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা কার কাছে বিচার চাইবো, কার কাছে অভিযোগ করবো? আমাদের কেউ খবর নেয়নি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

শরীফুল ইসলাম/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।