রাস্তার অবস্থা বেহাল, দুর্ভোগ চরমে
টানা বৃষ্টিতে নীলফামারীর বেশিরভাগ গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা বেহাল আকার ধারণ করেছে। কোনো কোনো রাস্তায় প্রায় হাঁটুসমান কাদা। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদরের ১ নম্বর চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের দক্ষিণ চওড়া (গাঠাংঠারী) এলাকার কাফির বাড়ি থেকে ডা. ধীরেন্দ্র নাথের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক কাঁচা রয়েছে। কাদা-পানিতে রাস্তার অবস্থা বেহাল।
টুপামারী ইউনিয়নের নিত্যানন্দী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান সেবু পাটোয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, রামগঞ্জ ব্রিজ থেকে ডাউয়াবাড়ী প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত চার কিলোমিটার পথ কাঁচা রয়েছে। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে চলাচল করা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় কোলে করে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে অনেকবার অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমল চন্দ্র রায় জাগো নিউজকে বলেন, এ রাস্তায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। রাস্তাটি পাকা করা জরুরি।
রামগঞ্জ মাঠ থেকে পাঠোয়ারীপাড়া ও তেলিপাড়া হয়ে বেরুবন বাজার পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তাটিও বর্ষায় চলাচলের অনুপযোগী। একই অবস্থা তরণিবাড়ী বাজার থেকে মমতা বাজার হয়ে বোর্ড স্কুল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটির।
হরতকীতলা মোশাররফ মার্কেট থেকে কানাইকাটা রেলঘুমটি পর্যন্ত গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে কামারপাড়া, কানাইকাটা, ঘুয়াটারী, দুখুপাড়াসহ ছয়টি এলাকার লোকজন যাতায়াত করেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয় পড়ে।
পলাশবাড়ী ইউপি সদস্য অফিজ উদ্দিন শুকুর আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘পলাশবাড়ী বাজার থেকে বৌজারীপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটিও বর্ষায় কাদায় পরিণত হয়। চলাচল করা যায় না। এমপির কাছে অনুরোধ রাস্তাটি দ্রুত নির্মাণ করা হোক।
১ নম্বর চওড়া বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বিটু জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার এলাকার রাস্তাগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন রাস্তাগুলো দ্রুত পাকা করা হোক।’
সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফিরোজ হাসান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, কুমবাড়ীডাঙ্গা পাকা রাস্তা থেকে ডুগডুগী বাজার বাইপাস পর্যন্ত কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি হলে এসব রাস্তা কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। তবে এসব কাজ চেয়ারম্যানের আওতায় নেই, এলজিডির আওতাধীন। তাই তদবির ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।
কচুকাটা ইউনিয়নের আব্দুল হাইয়ের ভাটার মোড় থেকে দোলাপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটির দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার। বৃষ্টি হলে এ রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল বা সাইকেল চালিয়ে চলাচল করা যায় না। চলতে গিয়ে অনেকে আহত হন। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুততম সময়ে কাঁচা রাস্তাটি পাকা করা হোক।
জানতে চাইলে নীলফামারী সদর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিরল চন্দ্র রায় জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কাছে শুধু সরকারি তালিকাভুক্ত রাস্তার হিসাব রয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে পাকা করা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় জাগো নিউজকে বলেন, বর্ষা মৌসুম শেষ হলে রাস্তাগুলোর যে যে স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আসাদুজ্জামান নূর জাগো নিউজকে বলেন, গ্রামের সব কাঁচা রাস্তা পযার্য়ক্রমে পাকা করা হবে। তবে আগের তুলনায় গ্রামে পাকা রাস্তার সংখ্যা বেড়েছে।
ইব্রাহিম সুজন/এসআর/এএসএম