সেতু নির্মাণ

গাফিলতির অভিযোগে ঠিকাদারের কাজ বাতিল, দুর্ভোগে তিন উপজেলাবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০২:৫৪ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২৪
শুধু সেতুর পাইলিং হয়েছে

রাজবাড়ী জেলা শহর, কালুখালী ও পাংশা উপজেলাবাসীর চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো কালুখালীর কালিকাপুরের ইয়াকুব মোড় সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পণ্য পরিবহনসহ ছোট-বড় নানান যান চলাচল করে।

ফলে সড়কটির পৃথক স্থানে দুটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সময় ধরা হয় ১৯ মাস। অথচ ২৭ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি একটি সেতুও।

এরমধ্যে আবার নির্মাণাধীন সেতুর উভয় পাশের সড়কে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় কাজ বাতিল করে নতুন করে ইস্টিমেট জমা দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। যা রয়েছে অনুমোদনের অপেক্ষায়। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজটি বাতিল করা হয়।

সেতু নির্মাণ, গাফিলতির অভিযোগে ঠিকাদারের কাজ বাতিল, দুর্ভোগে তিন উপজেলাবাসী

এর আগে ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এলজিইডি আওতাধীন রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ঝাউগ্রামের ইয়াকুব মোড় সড়কে ১৬ ও ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি আরসিসি স্লাব সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষের চুক্তিতে নির্মাণের দ্বায়িত্ব পায় শরিয়তপুরের মেসার্স শেখ এন্টারপ্রাইজ। এতে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু কাজ শুরুর ২৭ মাস অতিবাহিত হলেও সেতুর কোনো অংশই দৃশ্যমান হয়নি। শুধু পাইলিং ও পিলারের পাটাতনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে কাজ। এদিকে নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়াতে বাস্তবায়নকৃত কাজের অংশ হিসাব করে ঠিকাদারকে বিল দিয়েছে এলজিইডি।

স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক সরদার, মিলন শেখ, আলিমউদ্দন মণ্ডল ও বাচ্চু বলেন, সড়কটি রাজবাড়ী জেলা শহরসহ কালুখালী ও পাংশা উপজেলার যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি ও কৃষি পণ্য আনা-নেওয়া হয়। কিন্তু সেতুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি কেটে প্রায় তিন বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে করে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

সেতু নির্মাণ, গাফিলতির অভিযোগে ঠিকাদারের কাজ বাতিল, দুর্ভোগে তিন উপজেলাবাসী

গাড়িচালক সাহেব আলী, নাসির, মো. মিল্টন বলেন, ইটের রাস্তা দিয়ে ভারি মালামাল ও যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করতে সমস্যা হয়। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর বৃষ্টি হলে তো আরও সমস্যা বেড়ে যায়। মূল রাস্তা থেকে ইটের রাস্তায় নামতে গেলে স্লিপ করে গাড়ি। এছাড়া সেতুর দুই পাশে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও লাইট নেই।

এলজিইডির কালুখালী উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কুমার দাস বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে টেন্ডার হওয়ার পর দুটি সেতুর কাজের দ্বায়িত্ব পায় শরিয়তপুরের মেসার্স শেখ এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেতু দুটি ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ১৮ শতাংশ ও ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মূলত ঠিকাদারের গাফিলতিতে সেতুর কাজ শেষ হয়নি। টেন্ডার হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গড়িমসির কারণে কনস্ট্রাকশনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ফলে ওই প্রতিষ্ঠান সেতু দুটির কাজ অসমাপ্ত রাখে। যার কারণে ঠিকাদারের বাস্তবায়নকৃত কাজের ১০ শতাংশ জরিমানা করা হয়। এ অবস্থায় বাকি কাজের জন্য নতুন করে ইস্টিমেট করা হয়েছে। যা অনুমোদন হলেই নতুন করে কাজ শুরু হবে।

রুবেলুর রহমান/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।