শাটডাউন-কারফিউয়ে আমচাষিদের মাথায় হাত
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ও সরকারের দেওয়া কারফিউয়ের কারণে কয়েকদিন ধরেই বিঘ্ন হয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল। দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছাতে পারছে না আমের ট্রাক। এতে কমে গেছে দাম। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন আমচাষিরা।
কানসাট আম বাজারের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘পাঁচদিন আগে সিলেটের উদ্দেশ্যে ১০০ ক্যারেট আম ট্রাকে করে পাঠিয়েছিলাম। ঢাকা পার হওয়ার পরে আন্দোলনের কারণে আটকে যায় আমভর্তি ট্রাক। ফলে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি ট্রাক। রাস্তায় পচে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫০ ক্যারেট আম। এতে আমার প্রায় ৪০ হাজার টাকার লোকসান হয়েছে।’
আনারুল নামের একজন আমচাষি বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরেই দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ ছিল। এতে কমে গেছে আমের দাম। চার হাজার টাকা দামের আম এখন দুই হাজারে এসে ঠেকেছে। তাই গাছেই আম পেকে-পচে নষ্ট হচ্ছে। তারপরও আম নামাচ্ছি (পাড়া) না। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। কাল থেকে আম নামাবো।’
ব্যবসায়ী অলিউল আরেফিন দোলন বলেন, ‘আমাদের সব কার্যক্রম অনলাইনে। তবে গত পাঁচ দিন ধরে ইন্টারনেট নেই। এ কারণে আমাদের সব কার্যক্রম বন্ধ। এতে আমাদের লোকসান হচ্ছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।’
অনলাইনে আম বিক্রি করেন শিবগঞ্জ উপজেলার ইসমাইল খান শামীম। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ঘরপণ্য’। তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই কুরিয়ারে ৩০ ক্যারেট আম পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। রাস্তায় পচে নষ্ট হয়েছে সব আম। এতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
ইসমাইল খান বলেন, দেশে এখনো ইন্টারনেট বন্ধ। তাই আমাদের ব্যবসাও বন্ধ। আমরা এখন নিরুপায় হয়ে বসে আছি।
কানসাট আড়তদার ও সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, কোটা আন্দোলনের প্রভাব আমের বাজারেও পড়েছে। কয়েকদিন ধরে আমের বাজার মন্দা। চাষিরা আম কম পাড়ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. পলাশ সরকার বলেন, দেশের অবস্থা এখন অনেকটা ভালো। আশা করছি আর সমস্যা হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার চার লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। যা গতবছর ছিল চার লাখ ২৫ হাজার টন।
সোহান মাহমুদ/এসআর/জিকেএস