হাওরের পোনা ও ডিমওয়ালা মাছে সয়লাব কিশোরগঞ্জের বাজার

এসকে রাসেল
এসকে রাসেল এসকে রাসেল , জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৪
ছবি: বাজারে আসছে বিভিন্ন মাছের পোনা

পোনা ও ডিমওয়ালা মাছে সয়লাব কিশোরগঞ্জের বাজার। প্রতিদিনই বাজারে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ। হালকা ও মিহি বুননের চায়না দুয়ারী জাল মূলত মাছ ধরার এক ধরনের ফাঁদ। হাওরগুলোতে এই জালের ব্যবহার বেড়েছে। আর এতে আশঙ্কাজনক হারে নষ্ট হচ্ছে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই জালের ব্যবহার চলতে থাকলে হাওরে মাছের সংকট দেখা দেবে। আর মৎস্য অধিদপ্তর বলছে এ বিষয়ে অভিযান চলমান রয়েছে, এসব জাল ধ্বংস করা হচ্ছে।

সরেজমিনে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখলা মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাকডাকা ভোর থেকে এ বাজারে ছোট-বড়, দেশি সব মাছ নিয়ে ভিড় করেছেন জেলে ও আড়ৎদাররা। তবে বাজারে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। কারেন্ট ও চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়ে এ বাজারে শুধু বোয়াল মাছের পোনাসহ বিভিন্ন মাছের পোনার সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয়রা বলছেন, কিশোরগঞ্জের হাওরে চায়না দুয়ারী জালের ব্যবহারের কারণে পোনা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ একেবারে ধ্বংসের মুখে। তাই এ জাল বন্ধে প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার দাবি মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জে বছরে ৭০ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন মাছের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় ৮৩ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন। যা সারাদেশে বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে থাকে।

হাওরের পোনা ও ডিমওয়ালা মাছে সয়লাব কিশোরগঞ্জের বাজার

হাওর থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন নিমাই। তিনি বলেন, হাওরে পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু খারাপ মানুষ কারেন্ট ও চায়না দুয়ারী জাল নিয়ে হামলে পড়ে। তারা ছোট ছোট মাছ ও ডিমওয়ালা মাছগুলো ধরে ফেলে, এতে করে হাওরের মাছ কমে যাচ্ছে। আমাদের মতো সাধারণ জেলেরাও এতে বিপাকে পড়েছে।

বালিখলা মাছ বাজার থেকে মাছ কিনে গাজীপুরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন এনামুল হক। তিনি জানান, হাওরের মাছের চাহিদা চাষের মাছের তুলনায় অনেক বেশি। তাই বালিখলা মাছ বাজার থেকে মাছ কিনতে আসি। তবে বর্ষা মৌসুমে বাজারে বেশি দেখা যাচ্ছে পোনা মাছ। এগুলো বড় হলে হাওরের মানুষেরই বেশি লাভ হতো। এই ছোট মাছগুলো খেতেও মজা না।

বালিখলা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী রতন মিয়া জানান, মাছের ডিম পাড়ার সময় হাওরে ১৫-২০ দিন মাছ ধরা বন্ধ করা গেলে মাছের উৎপাদন বাড়বে। এই মাছ সারা বছর ধরেও জেলেরা শেষ করতে পারবে না।

বালিখলা মাছ বাজারের সভাপতি হাদী হারিস বলেন, আমি এই ছোট মাছ বিক্রির বিপক্ষে। একবার বাজারে নিয়ম চালু করেছিলাম বালিখলা মাছ বাজারে পোনা মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ। সবার সঙ্গে আমি একা পেরে উঠতে পারিনি। প্রশাসন যদি হাওরে ও হাওরের আশপাশের বাজারগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করে তাহলেই এটা বন্ধ করা সম্ভব।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযানে ধরা এসব জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। পোনা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ যেন না ধরে সে বিষয়ে জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।