৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ, মাছ ধরতে সাগরে যাচ্ছেন জেলেরা
সাগরে মাছ ধরায় টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। রাত থেকে ইলিশ মাছ ধরা ফের শুরু হয়েছে। এতে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার উপকূলীয় এলাকার জেলেপাড়ায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে।
মিরসরাই উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ২৫৫৭ জন্য নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে নিবন্ধিত জেলেদের সরকার থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেরা সাগরে মাছ আহরণের সব প্রস্তুতি নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের পাঁচটি ইলিশ প্রজনন পয়েন্টের একটি মিরসরাইয়ের উপকূলীয় সাহেরখালী এলাকা। নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় দুই মাস ধরে বেকার হয়ে ছিল উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ২৯টি জেলেপাড়ার বাসিন্দা। এ পাড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে শুধু শাহেরখালীতেই আছে ৪২০ জেলে পরিবার। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারি সহায়তা দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
সাহেরখালী ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকার সম্ভু জলদাশ বলেন, ‘এ উপজেলায় অনেক জেলে রয়েছে। নিবন্ধিত হয়েছে কিছু সংখ্যক। যারা নিবন্ধিত হয়েছে তারা নিষেধাজ্ঞার সময় সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। বেশিরভাগ জেলে পরিবারের দুমাস কষ্টে দিন কেটেছে। ৪৩১ জেলে পরিবার নিবন্ধন থাকার পরও সরকারি সহায়তা পায়নি।’
ডোমখালী এলাকার হিমাংশু জলদাশ বলেন, ‘দীর্ঘ দুমাস পর নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের কিছুটা উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও পাশাপাশি ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। অনেকের ঋণ রয়েছে। কিন্তু দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকায় পরিশোধ সম্ভব হয়নি। এখন মাছ ধরে নিজেও চলতে হবে, ঋণও পরিশোধ করতে হবে। এবার অনেক আশায় নিয়ে আমরা সাগরে নামবো। কারণ গত বছর আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি। আশা করছি এ বছর প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে।’
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, ইলিশের প্রজননকালীন দীর্ঘ ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বর্তমানে মাছের উৎপাদন বাড়ছে। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারলে বঙ্গোপসাগর একটি সমৃদ্ধ মৎস্য ভান্ডারে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার রাত ১২টায় ৬৫ দিনের সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে জেলেরা সব প্রস্তুতি নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেছে।
মৎস্যসহ মূল্যবান প্রাণীজ সম্পদ সুরক্ষায় গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। ইলিশের জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সফলতাকে অনুসরণ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি চিংড়ি, কাঁকড়ার মতো অন্য মাছ আহরণেও ছিল এ নিষেধাজ্ঞার আওতায়।
এমএমডি/এমআরএম/এমএস