গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২৯ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বাড়ছে। এ অবস্থায় ২৯টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার এবং শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ঘাঘট নদের পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া ও ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, হরিপুর ইউনিয়ন ও সাঘাটা উপজেলা ভরতখালী ও হলদিয়া ইউনিয়ন ছাড়াও বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে।
নদীতে পানি বাড়তে থাকায় সদর উপজেলার মোল্লার চর, ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়ন, সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৫১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। একইভাবে ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার ও করতোয়ায় গোবিন্দগঞ্জে চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার কমেছে।
পানি বেড়ে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাটসহ বাড়িঘর ডুবে গেছে। পানিতে নিমজ্জিত গ্রীষ্মকালীন অনেক ফসল। জেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। রান্না-খাওয়াসহ গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের বাসিন্দা জয়নাল মিয়া। তিনি বলেন, ‘চরে প্রতিটি বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ নৌকা, কেউবা মাচা করে উঁচু স্থানে রয়েছেন। এখানকার সবাই কষ্টে আছি।’
আরেক বাসিন্দা কায়সার প্রামাণিক বলেন, ‘চারদিকে শুধু পানি থই থই করছে। আমরা মানুষ কিছু কষ্ট করে হলেও থাকার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে। কিন্তু গবাদিপশু নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।’
এদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করায় জেলায় ২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বন্ধ ঘোষণা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকেছে। কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কেউই বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। যে কারণে বন্যাকবলিত চার উপজেলার ২৯টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।’
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজনের ঢলে গাইবান্ধায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়লে বড় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা হয়েছে।
এ এইচ শামীম/এসআর/জেআইএম