নেত্রকোনায় সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৪
পাহাড়ি ঢলে এভাবে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। জেলার উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছাড়াও গণেশ্বরী, মহাদেব, বাখলা, মঙ্গেলশ্বরী, বৈঠাখালী, কংস, সোমেশ্বরী ও ধনু নদীর পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার সাত ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৩টার দিকে উব্দাখালী নদীর ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। ওই উপজেলার কৈলাটি, বড়খাপন, পোগলা, খারনৈ, রংছাতি, কলমাকান্দা সদরসহ সাতটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কলমাকান্দা-বরুয়াকোনা, বাহাদুরকান্দা-বাসাউড়া, ঘোষপাড়া-হরিণধরা, কলমাকান্দা-সাঈদপাড়া, মন্তলা-ইসবপুর, গোবিন্দপুর-রানীগাঁও, উদয়পুর-বড়খাপনসহ আরও বেশ কিছু গ্রামীণ সড়কের স্থানে স্থানে পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া খলা, বাসাউড়া, বাহাদুরকান্দা, ডুবিয়ারকোনা, ধীতপুরসহ অন্তত ২৩ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ঢুকেছে।

কলমাকান্দার পোগলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। আর একটু পানি বাড়লে মানুষজনের বাড়িঘর ছাড়তে হবে।

আরও পড়ুন

খারনৈ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, ইউনিয়নের বাউসাম, লক্ষ্মীপুর, শ্রীপুর, খাগগড়া, বিশ্বনাথপুর, সেনপাড়া, রুদ্রনগরসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকটি বাড়ির উঠানে ও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। আর এক থেকে দেড় ফুট পানি বাড়লে প্রচুর বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাবে।

পাউবো নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান জানান, উব্দাখালী নদীর পানি বাড়ছে। নদীর কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানি এখনো বিপৎসীমার ৩ দশমিক ৯২ মিটার নিচে রয়েছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৮৯ মিটার। নদীর দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৫৫ মিটার, সেখানেও পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ২৩ মিটার নিচে আছে। কংস নদের পূর্বধলার জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধুন নদের খালিয়াজুরি পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৭৫ মিটার এবং খালিয়াজুরি পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। তবে আশা করা যাচ্ছে, ভারী বৃষ্টি না হলে বন্যার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যার পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আমরা চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে খোঁজখবর নিচ্ছি। এখনো কেউ পানিবন্দি হয়নি। জরুরি মুঠোফোন নম্বর খোলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এইচ এম কামাল/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।