দুই শিশুর মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:০০ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৪
নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় এই দুই শিশুর মরদেহ

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর মরদেহ সৎকার থেকে তুলে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সৎকারে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবে শিশু দুটির পরিবার। তবে তাদের নাম এখনো জানা যায়নি।

বুধবার (৩ জুলাই) শিশুদের পরিবার শ্রাদ্ধ (ধর্মীয় আচার) শেষে এ মামলা করবেন। এদিকে উক্ত ঘটনায় এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও শিশুদের পরিবারের সঙ্গে তারা কথাও বলেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের রুবেল দাসের ছেলে সূর্য দাস (৬) ও মামুদপুর গ্রামের গোবিন্দ দাসের ছেলে প্রলয় দাস (৭) নদীতে গোসলে গিয়ে ডুবে মারা যায়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রীতি অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে ছেলে বা মেয়ে মারা গেলে লাশ দাহ না করে সৎকার করা হয়। সে অনুযায়ী প্রলয় ও সূর্যের লাশও শ্মশানের পাশে সৎকার করা হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অজুহাতে মরদেহগুলো উত্তোলন করে কুশিয়ারা নদীতে ভাসিয়ে দিতে শিশুদের পরিবারকে বাধ্য করে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর প্রভাবশালীরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা গত সোম এবং মঙ্গলবার দুদিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত শিশুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলেছি, তারা যদি মামলা না করেন তবে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেবো।

ওসি আরও বলেন, বুধবার শিশুদের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে তারা এসে অভিযোগ দেবেন। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি ভয়ের কিছু নেই, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

মরদেহ অনুসন্ধানে ডুবুরি দল এসেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমনটি আমাদের জানা নেই। ডুবুরি দল এলে অবশ্যই আমরা জানতাম।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সৎকারের জন্য সরকারি সহায়তা হিসেবে ২০ হাজার টাকা করে উভয় পরিবারকে দিয়েছি। কিন্তু তার আগেই তারা সৎকার করেন।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এখন তারা শোকাহত। তারা মামলা দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে ইউএনও বলেন, আসলে এভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে না। তবে বিভিন্ন জায়গায় বলে রেখেছি লাশ যদি ভেসে ওঠে, তাহলে যেন আমাদের বিষয়টি জানানো হয়। ভেসে না উঠলে নদীতে মরদেহ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।