বিএনপি নেতাদের গালে ‘জুতা মারতে’ নেতাকর্মীদের মিছিল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ এএম, ০১ জুলাই ২০২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নিজ এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি নেতাদের গালে ‘জুতা মারতে’ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে চরহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবৈধ কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে ডাকা সমাবেশ শেষে ওই মিছিল বের করা হয়।

মিছিলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা স্লোগান তোলেন, ‘শিকদারের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে’; ‘বুদ্ধি রিপনের গালে গালে জুতা মারো তালে তালে’; ‘অবৈধ কমিটি মানি না মানবো না’; ‘টাকা খেয়ে কমিটি মানবো না মানবো না’।

নুরুল আলম শিকদার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মাহমুদুল হাসান রিপন সদস্য সচিব। গত ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর (শুকবার) এ দু’জনের নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে জেলা বিএনপি। কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ কমিটির বিরুদ্ধে তখন ঝাড়ু মিছিলও করেছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি নেতা গাজী মো. আলমগীরের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ মেম্বার, হারুন অর রশীদ ভূঞা, আবু তাহের, মো. সফি উল্যাহ (মন্ত্রী সফি), নূরুল হুদা বাচ্চু, সেলিম মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন, মোর্শেদ আলম, আব্দুল হক হকসাব, কামাল উদ্দীন, আব্দুর রহীম, আবদুল মতিন, রবিউল আলম ও সেলিম ড্রাইভার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ২৮ মাস পর মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটি গত শুক্রবার (২৮ জুন) নুরুল আলম শিকাদের মুছাপুরের বাড়িতে কাউন্সিল ছাড়া নিজেদের লোক দিয়ে আট ইউনিয়নের পকেট কমিটি গঠন করে। এতে দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করা এবং এলাকার বাইরে থাকা এমনকি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে গা ভাসানো লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে কর্মীবান্ধব লোকদের দায়িত্ব দিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা জাগো নিউজকে বলেন, নেতারা টাকার বিনিময়ে নিষ্ক্রিয় লোকদের দিয়ে বিএনপির কমিটি করেছেন। এজন্য উপজেলা বিএনপির শিকদার-রিপন দায়ী। এ দু’জনের লোভের কারণে মওদুদ আহমদের মতো সিনিয়র নেতার এলাকায় বিএনপি আজ বিলুপ্তির পথে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ পাওয়া সিরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন মাসুম চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। চরপার্বতী ইউনিয়নের সভাপতি রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি করেন। চরহাজারী ইউনিয়ন সভাপতি নুরনবী বাবুল ঢাকায় ব্যবসা করেন। চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সক্রিয় কর্মী ছিলেন। চরফকিরা ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রাব্বানী বিপ্লব উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। রামপুর ইউনিয়ন সভাপতি আনছার উল্যাহ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন। সাধারণ সম্পাদক আলমাছ খান বাহাদুর সপরিবারে ঢাকায় থাকেন। মুছাপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন মাস্টার আমেরিকা থাকেন (কিছুদিন আগে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন)।

এ সব বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদারকে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন আট ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সভা ডেকে নেতাকর্মীদের সামনে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপি বড়দল, কে কোথায় জুতা মিছিল করেছে তা আমার জানা নেই।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের কাছে জানতে কল করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন, এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।