যশোরে গৃহবধূ হত্যায় দেবরের মৃত্যুদণ্ড
যশোরের বাঘারপাড়ায় গৃহবধূ হত্যা মামলায় দেবর বিমান বাহিনীর সাবেক করপোরাল প্রভোস্ট মোহাম্মদ শাহবুদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামি তার স্বামী জুলফিকার আলী ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩০ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক সুরাইয়া সাহাব এ রায় দেন। মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বাঘারপাড়া উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের মৃত মোশারফের ছেলে।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জুলফিকার আলীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছিলেন তুলি। এসময় দেবর শাহাবুদ্দিন তার ঘরে প্রবেশ করলে শাশুড়ি ফরিদা তার ঘরের দরজা আটকে দেয়। এরপর শাহবুদ্দিন ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি তুলিকে কুপিয়ে জখম করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে শাহাবুদ্দিন ও তার মা পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা তুলিকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করে। পরে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরদিন দুই সন্তানের জননী তুলি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ঝিকরগাছা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের শহিদুল বাদী হয়ে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তুলির দেবর, শাশুড়ির সঙ্গে তার স্বামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তুলির স্বামী জুলফিকার আলীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়কে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এ হত্যায় তার স্বামীর প্রত্যক্ষ মদদ ছিল।
দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তুলির দেবর মো. শাহাবুদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামি স্বামী জুলফিকার আলী ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
এদিকে এ রায়ে পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট না মামলার বাদী পক্ষ। নিহত তুলির ভাই নূর আলম জানান, জুলফিকার আলী ও তার মা সরাসরি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। চার্জশিটে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ফলে ওই দুই আসামির শাস্তি নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।
মিলন রহমান/আরএইচ/জেআইএম