মৌলভীবাজারে বন্যা

আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষের ভিড়, সংকট খাদ্য-পানির

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৭:৫২ পিএম, ২২ জুন ২০২৪

মৌলভীবাজারে নদীতে পানি কমলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বন্যার্তদের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে কেন্দ্রগুলোতে এরই মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (২২ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৪৯টি ইউনিয়নে তিন লাখ ৫১ হাজার ১২২ জন মানুষ পানিবন্দি আছেন। ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ৬৩ হাজার ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর তীরের গ্রামগুলোর পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও সেখানে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার পাওয়া যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এরই মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি, রাজনীতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন।

এছাড়া জেলায় মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও খাদ্য সংকটে ভুগছে। এবারের ঈদুল আযহায় নায্যমূল্য না পাওয়ায় অনেক খামারিও গরু বিক্রি করতে পারেননি। আবার অনেক কৃষকের ঘরেও গবাদি পশু রয়েছে। এসব নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।

সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সালেক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, দুদিন ধরে ছেলে অসুস্থ, তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে অনেক ভোগান্তি হয়েছে। প্রতি বছর বন্যায় এমন কষ্ট পিছু ছাড়ছেনা।

বড়লেখা উপজেলার তালিমপুরের পানিবন্দি সালেহ উদ্দিন বলেন, অনেক কষ্টে আছি। চারদিকে পানি।

আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষের ভিড়, সংকট খাদ্য-পানির

জুড়ী উপজেলার একটি আশ্রয়কেন্দ্র আসা মারুফা আক্তার বলেন, ভেবেছিলাম হয়তো কষ্ট কিছু কম হবে। কিন্তু এখানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বড়লেখার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম জানান, বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রাপ্ত ত্রাণ বন্টন চলছে। আরও ত্রাণের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করা হচ্ছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের সাধ্যমতো বানভাসি মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আমরা বিশ্বাস করি সবার অবস্থান থেকে চেষ্টা করলে যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জাগো নিউজকে জানান, মৌলভীবাজারে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টি কম হয়েছে। এছাড়া উজানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোতে বালু ভর্তি বস্তা ও মাটি দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত রাখার কাজ চলমান রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে রয়েছে। পানিবন্দি এলাকার মানুষেদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও চাল দেওয়া হচ্ছে।

এনআইবি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।