সাংবাদিক আলাউদ্দীন হত্যাকাণ্ড: ২৮ বছর পরও বিচারের আকুতি
সাতক্ষীরায় শোক, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সাহস, বেদনা আর গৌরবের অম্লান স্মৃতি নিয়ে পালিত হয়েছে দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা স. ম আলাউদ্দীনের ২৮তম শাহাদত বার্ষিকী।
১৯৯৬ সালের ১৯ জুন নিজ পত্রিকা অফিসে কর্মরত অবস্থায় ঘাতকের গুলিতে শহীদ হন স. ম আলাউদ্দীন। বুধবার (১৯ জুন) স. ম আলাউদ্দীনের ২৮তম শাহাদত বার্ষিকীতে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ স. ম আলাউদ্দীনের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়) আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন, শহীদ স. ম আলাউদ্দীন তনয়া সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ ও জিএস মনিরুল ইসলাম মিনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, জেলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিদার রহমান, দৈনিক পত্রদূত পরিবার, সাতক্ষীরা জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ, জেলা আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা সাংবাদিক সমাজ, পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাব, জেলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দেশের সার্বিক উন্নয়নে স. ম আলাউদ্দীনের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স. ম আলাউদ্দীন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হয়ে অংশগ্রহণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠা করেন সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স, ভোমরা স্থলবন্দর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক স্কুল), জেলা ট্রাক মালিক সমিতি, সাতক্ষীরা নারকেলতলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেন দলের দুঃসময়ে। তার মতো ত্যাগী নেতা আজ বড়ই বিরল।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন তাকে নিজ পত্রিকা অফিসে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২৮ বছরেও আইনগত জটিলতার কারণে তার সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়নি। অনতিবিলম্বে মামলাটির বিচার কাজ সম্পন্ন হবে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হবে বলে প্রত্যাশা করি।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও শহীদ স. ম আলাউদ্দীন কন্যা লায়লা পারভীন সেঁজুতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার পিতা সম্পর্কে আগে থেকে জানতেন। সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মলনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার পিতা স. ম আলাউদ্দীন সম্পর্কে জানতেন বলে মন্তব্য করেছেন। আমার পিতা হত্যার ২৮ বছর পেরিয়ে গেছে, বিচার আজও হয়নি। আমি আমার পিতা হত্যার বিচারসহ যেসকল হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন বলেন, স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন দক্ষিণবঙ্গের একজন অকুতোভয় সৈনিক। তিনি ছিলেন উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাকে হত্যা করে ঘাতকরা সাতক্ষীরার উন্নয়নকে শত বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তিনি ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/জিকেএস