মিরসরাইয়ে চামড়ার দাম নিয়ে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০১:০১ এএম, ১৮ জুন ২০২৪

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। সোমবার (১৭ জুন) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জবাইকৃত পশুর চামড়া সংগ্রহ করেন তারা। এরপর সেগুলো নিয়ে বাজারগুলোতে বিক্রির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও কোনো লাভ হয়নি। অনেক ব্যবসায়ীকে দুপুরের পর থেকে রাত সাড়ে ১১টায়ও বসে থাকতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে সরকার প্রতি বর্গফুট ৫০-৫৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও আড়তদাররা গরুর চামড়ার দর দিচ্ছেন ২৫ টাকা। এ নিয়ে দর কষাকষিতে বিপাকে পড়ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তবে এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় আড়তদাররা উপজেলায় ট্যানারি ও শ্রমিক সংকটের কারণে চামড়ার দর সরকারি হিসেবে না পাওয়ার কথা জানান।

নিজামপুর কলেজ বাজারে ইমাম হোসেন নামে একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী বলেন, এবার লবণের দাম কম। সবকিছু ঠিকঠাক আছে। তবু সরকারের দর পাবো না জেনেই আমরা অর্ধেক দামে চামড়া সংগ্রহ করেছি। কিন্তু আমরা সেই টাকাটাও পাচ্ছি না। লাভ না পেলেও লস দিয়ে কি আমরা চামড়া বিক্রি করবো? এরপরও আমরা বিক্রি করছি লস কমানোর জন্য। আর সারাদিনের পুরো পরিশ্রম তো বৃথা।

বড়তাকিয়া বাজারের চামড়া ব্যবসায়ী নুর উদ্দিন বলেন, আমরা প্রতি চামড়া ২০০ টাকা দরে করেছি ঠিকই। সে চামড়া বাজারে পৌছাতে শ্রমিক খরচ, পরিবহন খরচ ও লবণজাতসহ ৩৫০-৪০০ টাকা খরচ পড়েছে। তাহলে পাইকারেরা যদি ৪০০ টাকা রেট দেয়, লাভ কী হলো? আগামীতে চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।

মিরসরাই উপজেলা কাঁচা চামড়া সমিতির সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, আমার টার্গেট ছিল আজকে সাড়ে ৬ হাজার চামড়া সংগ্রহ করা। এরমধ্যে চার হাজার চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। চামড়া আরও দুদিন নেবো। তবে প্রক্রিয়া করা থাকতে হবে। না হয় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলে চামড়া নষ্ট হয়ে যায়।

এবার চামড়ার দর নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চামড়া সংগ্রহ করে যারা আনছেন তাদের আমরা আগেও বলেছি। প্রতিটি চামড়ায় আনুমানিক ৯-১০ কেজি লবণ লাগে। গুদাম ভাড়া দিতে হয়। এ উপজেলায় বেশি চামড়া বিক্রি করা যায় না। যেমন এবার আমাদের টার্গেট ৪৫ হাজার চামড়া সংগ্রহ করা। অথচ আড়ত আছে শুধু তিনটি। সেগুলোতে চামড়া রাখা যাবে ২০ হাজার থেকে ২৪ হাজার। বাকিসব চামড়া আমাদের শহরে নিয়ে যেতে হয়। পরিবহন খরচ লাগে। এরপরও আমরা সরকারি দর পাই না। এখন এই ব্যবসা করে আমাদেরও তো লাভ করতে হবে। তাই মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের দর ৪০০ টাকা হিসাব করে নিতে বলেছি। কিন্তু তারা যদি তা না শুনে, আমরা কি করতে পারি?

জোরারগঞ্জ বাজারের চামড়ার আড়তদার মহিউদ্দিন বলেন, আমরা প্রতি পিস চামড়া ৩৫০-৪০০ টাকায় নিচ্ছি। এরপর একটি চামড়ায় আরও ২০০ টাকা খরচ আছে। ঢাকায় ট্যানারিতে নিলে সরকার নির্ধারিত দাম দেয় না। নানা তালবাহানা শুরু করে, টাকা বকেয়া রাখে।

এমএমডি/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।