শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত

এসকে রাসেল
এসকে রাসেল এসকে রাসেল , জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ১৭ জুন ২০২৪

উপমহাদেশে সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ জামাতে ঢল নামে মুসল্লিদের।

সোমবার (১৭ জুন) সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন জেলা মারকাজ মসজিদের খতিব মাওলানা হিফজুর রহমান খান।

ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

এদিকে, শোলাকিয়ার ঈদ জামাত ঘিরে নেওয়া হয় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ছিল দুই প্লাটুন বিজিবি।

শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত

এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা জড়ো হতে থাকেন ঈদগাহে। প্রতি বছর ঈদের জামাতে এখানে লাখো মানুষের ঢল নামে। বড় জামাতে নামাজ আদায় এবং বেশি সওয়াব পাওয়ার আশায় প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেন অনেক মুসল্লি।

দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে দুটি ট্রেন। যা চলে ভৈরব-ময়মনসিংহ রুটে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ঈদুল আজহার জামাত ঘিরে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, বাইনোকুলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল।

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১৯৭তম ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করে দুটি বিশেষ ট্রেন।

শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত

ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ জঙ্গি হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগম। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই বছর ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।

জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্য প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের সেই জামাতে এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখ’ এর অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে, প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।

কেআরএম/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।