‘অ ভাই, গরু কত অইছে?’
কোরবানির বাজারের শুরু থেকে গরু মালিকরা বেশি দাম চাওয়ায় এবার অন্য বছরের তুলানায় কিছুটা ভিন্নতা দেখা গেছে পশু কেনার ক্ষেত্রে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আগে বেশিরভাগ ঈদের ৫-৬ দিন আগে কেনা হলেও এবার গত দুদিনে বেশি পশু কিনেছেন ক্রেতা। বিশেষ করে শুক্রবার (১৪ জুন) থেকে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। শনি ও রোববারও গরু বেচাকেনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
রোববার (১৬ জুন) বিকেলে মিঠাছরা বাজার থেকে গরু নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন আরিফ ও আরমান। পথে অনেকেই তাদের ডেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘অ ভাই, গরু কত অইছে? (এই যে ভাই, গরুর দাম কত হয়েছে?)’
এক লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি ষাঁড় কিনেছেন তারা। আরিফ ও আরমানের সঙ্গে গরুর দড়ি ধরে ছিলেন আরও কয়েকজন। তাদের বাড়ি মিরসরাই সদর ইউনিয়নের বিশ্ব দরবার এলাকায়।
আরিফ বলেন, “গরুতো নিলাম ভাই, তবে দাম বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। হাটে গরু কেনা থেকে শুরু হয়েছে দাম জিজ্ঞাসা। যারা দেখছে, তারাই জিজ্ঞাসা করছে, ‘অ ভাই, দাম কত হলো?’ মানুষ দাম জিজ্ঞাসা করায় মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগছে, আবার আনন্দও লাগছে। আসলে এমন দাম জিজ্ঞাসা শুধু কোরবানির পশু কেনার ক্ষেত্রেই হয়।”
আরমান বলেন, ‘বছরে একটা দিনইতো কোরবানি হয়। কোরবানির গরু কিনতে আসা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আলাদা একটা ভালোলাগা কাজ করে সবার মধ্যে। গরু কেনা, তারপর দড়ি ধরে সেই গরু হেঁটে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া। এই ব্যপারটাই অন্যরকম।’
উপজেলার ওয়াহেদপুর এলাকার বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, ‘একটা সময় গেছে ১০ হাজার টাকায় বড় গরু পাওয়া যেতো। ভাগিরা মিলে ৭০০-৮০০ টাকা করে তুলে গরু কিনেছি। আর এখন এটা এককেজি মাংসের দাম। এই কথা বললে নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করবে না। তবে এমন দিন গেছে। লাখ টাকার গরু কিনে নিয়ে গেলে আশপাশের মানুষ দেখতে এসেছে। আর এখন পাঁচ লাখ টাকা দামের গরু কিনলে মানুষ কিছুই মনে করে না।’
বড়তাকিয়া বাজারের ইজারাদার মাহফুজ আলম বলেন, ‘এবার খুবই জমজমাট ছিল বাজার। দূর-দূরান্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা এসেছেন। বেচাকেনা ভালোই হয়েছে।’
এম মাঈন উদ্দিন/এসআর/জিকেএস