পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ভোগান্তি চরমে
টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে সুনামগঞ্জের ২৬টি নদ-নদীর পানি। একের পর এক ডুবছে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ছয় লাখেরও বেশি মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এরইমধ্যে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা, চেলা, চলতি, মরা চেলা, খাসিয়ামারা, মৌলা, কালিউরি, ধূমখালিসহ সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেইসঙ্গে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের লক্ষ্মীপুর, নোয়াপাড়া, রসরাই, সুলতানপুর, হাছনবাহারসহ পাঁচটি গ্রাম। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, আমনের বীজতলা ও সবজিক্ষেত। ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ।
ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে ছাতক, তাহিরপুর, জগন্নাথপুর, ধর্মপাশাসহ আরও চার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। বিশেষ করে জগন্নাথপুর উপজেলার বেগমপুর, লাউতলা-রসুলগঞ্জ সড়কসহ বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি পাইলগাঁও ইউনিয়নের আলাগদি, জালালপুর, খানপুর, আলীপুরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দুর্গাপুর ও শক্তিয়ার খলা সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পাঁচ উপজেলার ছয় লাখেরও বেশি মানুষ।
নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা লুতফিয়া বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। কোনোরকম ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তা এসেছি। দুদিন ধরে রাস্তায় রাত্রিযাপন করছি।’
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আসিয়া বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘হঠাৎ ঢলের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ঘরের সব আসবাবপত্র ভেসে গেছে। খুব কষ্টে আছি আমরা।’
সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে সময় পার করছি।’
চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে বলে জানান জেলা পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
এর আগে ২০২২ সালের এই দিনে ঢলের পানিতে তলিয়ে যায় পুরো সুনামগঞ্জ। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ। সেইসঙ্গে ঢলের পানিতে ৫০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লিপসন আহমেদ/এসআর/জিকেএস