কুমিল্লায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের দায়ে ব্যবসায়ীর যাবজ্জীবন
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে স্কুলছাত্রী (১৩) ধর্ষণের দায়ে আলাউদ্দিন (৪২) নামে এক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের আটগ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৮ জুলাই সকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি শিশু টাকা নিয়ে আলাউদ্দিনের কসমেটিকসের দোকানে কাজল কিনতে যায়। ওই সময় তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার ছয় মাস পর শিশুটির দেহে পরিবর্তন দেখা দেয়, আর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক জানান যে শিশুটি ২৪ সপ্তাহ একদিনের অন্তঃসত্ত্বা।
পরে শিশুর বাবা আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। শিশুটির একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। সে এখন মায়ের সঙ্গে তার নানা বাড়িতে থাকে। এ ঘটনায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মঙ্গলবার আদালত এ রায় দেন।
রায়ে বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন উল্লেখ করেন, ধর্ষণের শিকার শিশুর গর্ভের সন্তানকে তার মা কিংবা তার আত্মীয়স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। সন্তানটি তার বাবা বা মা কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারবে। সন্তানের বয়স ২১ বছর হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। সন্তানের ভরণপোষণের অর্থ সরকার ধর্ষক আলাউদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি প্রদীপ কুমার দত্ত জাগো নিউজকে জানান, আসামির বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থদণ্ডের অর্থ ধর্ষণের শিকার শিশুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। অর্থ পরিশোধ না করলে আসামির সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জাহিদ পাটোয়ারী/এনআইবি/এমএস