পাখিবন্ধু আকাশ কলি দাস পেলেন বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড
পাবনার বেড়া উপজেলার কৈটোলা গ্রামের ‘পাখিবন্ধু’ খ্যাত আকাশ কলি দাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ এ ভূষিত হয়েছেন। বুধবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে থেকে তিনি এ পুরস্কার নেন।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইলডলাইফ কনসার্ভেশন-২০২৪ এর তিনটি ক্যাটাগরিতে পরিবেশ, বন ও জয়বায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। আকাশ কলি দাস বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, খ্যাতিমান গবেষক, বিজ্ঞানী, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মী/ব্যক্তিত্ব(ক) ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হন।
এ পুরস্কারে আকাশ কলি দাসকে দুই ভরি (২৩ দশমিক ৩২ গ্রাম) ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ ও পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
পাখিদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণে এলাকায় আকাশ কলি দাস ‘পাখিবন্ধু’ নামে পরিচিত। তার প্রকৃতি সেবায় সাথী হয়েছেন ছোট বোন ৬২ বছর বয়সী ঝর্ণা দাস। এখন তার বয়স প্রায় ৮৮ বছর। তিনি ও তার বোন ঘর সংসার করেননি। এ দেশে আত্মীয়-স্বজন বলতে আর কেউই নেই তাদের। যারা আছেন, তারাও স্বাধীনতার আগে চলে গেছেন ভারতে।
- আরও পড়ুন
চিরকুমার কলি দাসের পাখিপ্রেম
বাবা-মায়ের ছয় সন্তানের মধ্যে সবার বড় আকাশ কলি দাস। বাবা চন্দ্র কুমার দাস ছিলেন পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ীর নিবাস দিয়ার জমিদার বাড়ির নায়েব। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। সর্বশেষ তিনি স্থানীয় মাছখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে চাকরি থেকে অবসরে যান আকাশ কলি দাস।
কৈটোলা গ্রামে আকাশ কলির সাড়ে ছয় বিঘা সম্পত্তি যেন একটি ছোট্ট জঙ্গল। এ জঙ্গলে রয়েছে আম, কাঁঠাল, দেবদারু গাছ এবং ভারতীয় পার্সিমন, গাউবিসহ দেশি-বিদেশি অনেক গাছ। সব গাছই লাগানো হয়েছে পাখিদের কথা চিন্তা করে। নিজের বসতভিটা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন পশুপাখির জন্য।
পুরস্কার পাওয়ার আকাশ কলি দাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, কোনো কিছু পাওয়ার আশায় তিনি বন্যপ্রাণীদের ভালোবাসেননি। এটা অন্তর থেকেই করেছেন। বাকি জীবনটাও বন্যপ্রাণীদের ভালোবেসে কাটিয়ে দিতে চান।
এর আগে গত ৭ জুন জাগো নিউজে ‘চিরকুমার কলি দাসের পাখিপ্রেম’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এমকেআর