দ্বিতীয় স্বামীর কাছে না ফেরায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ছুরিকাঘাত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ১০:৩৭ এএম, ০৬ জুন ২০২৪

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় সাবেক স্বামীর কাছে ফিরতে না চাওয়ায় ফাতেমা মুন্নি (৩০) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ফাতেমা মুন্নি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তিলই এলাকার বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী।

অভিযুক্তের নাম শরিফুল শেখ। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর উপজেলার চর পদ্মবিল এলাকার তৈয়ব শেখের ছেলে।

ভুক্তভোগী নারী, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের সাজনপুর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেন ছৈয়ালের মেয়ে ফাতেমা মুন্নির সঙ্গে অন্তত ৬ বছর আগে বিয়ে হয় ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তিলই এলাকার বিল্লাল হোসেনের। তাদের সংসারে ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

ফাতেমা মুন্নি ১ বছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে পুনরায় বিয়ে করেন গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর উপজেলার চর পদ্মবিল এলাকার তৈয়ব শেখের ছেলে শরিফুল শেখকে। তবে কয়েক মাস সংসার করার পরে ফাতেমা মুন্নি জানতে পারেন শরিফুলের আরেকটি স্ত্রী রয়েছে। পরে শরিফুলকে ডিভোর্স দিয়ে প্রথম স্বামী বিল্লাল হোসেনের কাছে ফিরে আসেন তিনি।

এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই ক্ষিপ্ত হন শরিফুল। তিনি ফাতেমা মুন্নিকে তার সংসারে ফিরে যাওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন দিয়ে বিরক্ত করতে থাকেন। বুধবার সন্ধ্যায় শরিফুল ফাতেমা মুন্নিকে আর বিরক্ত করবে না বলে শেষ বারের মতো দেখা করার কথা বলে ডামুড্যায় আসেন। একপর্যায়ে তারা দেখা করেন এবং রিকশায় ফাতেমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলেন। তারা রিকশা নিয়ে কুতুবপুর এলাকায় আসলে হঠাৎ শরিফুল তার পকেট থেকে একটি ছুরি বের করে পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন। এসময় ফাতেমা নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি দিয়ে জখম করে পালিয়ে যান শরিফুল। এ সময় পথচারীরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী ফাতেমা মুন্নি বলেন, শরিফুলকে ডিভোর্স দিয়ে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভালোই চলছিলাম। কিন্তু শরিফুল বার বার ফোন দিয়ে আমাকে বিরক্ত করতে থাকে। আজ শেষবারের মতো দেখা করার কথা বলে আমার কাছে অনুরোধ করে। আমি বিশ্বাস করে ওর সঙ্গে দেখা করি। রিকশায় ঘুরতে ঘুরতে একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে শরিফুল আমার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়।

এ ব্যাপার সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা অমিত সেনগুপ্ত বলেন, ওই নারীটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পেটের নিচের অংশের আঘাতটি খুবই গুরুতর, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তার খাদ্যনালী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাছাড়া নারীটি বলছিলেন তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই অবস্থায় তার দ্রুত অপারেশন প্রয়োজন। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হয়, তার জীবন সংশয় হতে পারে।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, এক নারীকে কেউ আঘাত করেছে এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমন একটি খবর পেয়েছি। এবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিধান মজুমদার অনি/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।