হাতিয়া

দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:৩৪ পিএম, ২৭ মে ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নোয়াখালীর উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ৩৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ দুই হাজারের বেশি গবাদিপশু ভেসে গেছে।

রোববার (২৬ মে) রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দমকা হাওয়া ও মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দমকা হাওয়ায় গাছপাল ভেঙে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।

দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু

নদী উত্তাল থাকায় সাত লাখ অধিবাসীর দ্বীপ হাতিয়ার সঙ্গে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে হাজার হাজার লোক হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট, তমরুদ্দি ঘাট এলাকায় আটকা পড়েছেন।

হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৯ হাজার পরিবারের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। শতাধিক পুকুর ও মৎস্য ঘেরের কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। সাড়ে তিন হাজারের মতো কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য বনের হরিণ।’

দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু

স্থানীয়রা জানান, ঢালচরের চার হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। চরঘাসিয়ার ১৭ হাজার পরিবার ও চানন্দি ইউনিয়নের চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। হরনী, সুখচর, নলচিরা, চরকিং, চরইশ্বর, তমরুদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়িরচর ও জাহাজমারা ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত হাজার হাজার পরিবার রয়েছে পানিবন্দি। অনেকের বাড়িঘর-দোকানপাট ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে গেছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে হাতিয়ার বিভিন্ন এলাকার ৩৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আট হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। দুই হাজর ১৩টি গবাদিপশু জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে।

দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু

নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, হাতিয়া দ্বীপের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকের ঘর ভেঙে গেছে। দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি। এলাকার ১০০ কিলোমিটার কাঁচা সড়কের ৬০ শতাংশ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় নগদ টাকা, শুকনা খাবার ও চাল মজুত রাখা আছে। জরুরি সহায়তা হিসেবে ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা, ৩১৯ টন চাল, ৬৬৩ প্যাকেট শিশু খাদ্য ও আট হাজার ২২০ কেজি গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।