এমপি আনার হত্যাকাণ্ড
এলাকা ছাড়ার পর স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না কসাই জিহাদের
আলমগীর হান্নান আলমগীর হান্নান
প্রকাশিত: ০৩:০০ পিএম, ২৫ মে ২০২৪
খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুই জোড়া খুন মামলার আসামি হন ভারতে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদ (২৪)। রাজধানী এবং যশোরে পৃথক এই দুটি জোড়া খুন মামলায় পুলিশ আর দিঘলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী জাকির গ্রুপের চাপে এালাকা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
দেশে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও প্রতিবারই জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। গ্রেফতার এড়াতে অবৈধভাবে পাড়ি জমান ভারতে। সেখানেই ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে সর্বশেষ গ্রেফতার হয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের চার ছেলের মধ্যে তৃতীয় জিহাদ হাওলাদার। লেখাপড়া না করায় বাবার সঙ্গে রঙের কাজ করতেন। ২০২২ সালে বারাকপুরে সন্ত্রাসী আনসারের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তার। আনসারের প্রতিপক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান জিহাদ। ওই হামলায় গাজী জাকির এবং তার বড় ভাই আহত হন।
এরপর জাকির বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে যান ঢাকায়। সেখানে ডাকাতিসহ একটি জোড়া হত্যা মামলায় আসামি হয়ে গ্রেফতার হন। কিছুদিন জেল খেটে বেরিয়ে আসার পর আবার বাড়িতে ফিরে আসেন।
কিন্তু গাজী জাকির বাহিনী ও পুলিশের চাপে আবারও পালিয়ে যান তিনি। যশোরে গিয়ে একটি জোড়া হত্যা মামলায় আসামি হয়ে অবৈধভাবে চলে যান ভারতে। পরবর্তীতে ছোটভাই জাহিদকেও নিয়ে যান সেখানে।
দিঘলিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জিহাদ হাওলাদারের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া থানায় ২০২৩ সালের ৮ জুন অস্ত্র আইন, ২০২০ সালেল ২৫ মে মারামারি ও ২০২৩ সালের ২২ এপ্রিল মারামারির মামলা রয়েছে।
জিহাদ হাওলাদারের স্ত্রী মুন্নী বেগম জানান, ২০১৯ সালে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে জিহাদের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। সেসময় জিহাদ রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। খুব ভালো একজন মানুষ ছিলেন তিনি।
জিহাদের বড়ভাই স্থানীয় একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, অপর এক ভাই মসজিদের ইমাম। বাবা পেশায় রং মিস্ত্রি ছিলেন। বাবার সঙ্গে রং মিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। এলাকায় তার কোনো বদনাম ছিল না। ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর তাদের সংসারে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয় বলেও জানান স্ত্রী মুন্নী বেগম।
তিনি বলেন, এক বছর আগে ঢাকা ও যশোরের দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়ায় তিনি গা ঢাকা দেন। সেই থেকে জিহাদ দেশের মধ্যে কিংবা অন্য কোন দেশে আছে সেটা তারা জানেন না। সর্বশেষ তার সঙ্গে মাস ২ আগে দেড় মিনিটের জন্য মুঠোফোনে কথা হয়েছিল। ছেলের খোঁজ নিয়ে ফোন কেটে দেন।
শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে তার স্বামীর যোগাযোগের বিষয়ে জানতেন না জানিয়ে মুন্নী বলেন, জিহাদের কারণে নিজের মা-বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই। জিহাদের বড় দুই ভাইও তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করে না। শ্বশুর জয়নাল হালদারের আয়ে তাদের সংসার চলে।
জিহাদ হাওলাদার সম্পর্কে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাবুল আকতার বলেন, জিহাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। থানায় অস্ত্র আইনে একটিসহ মোট তিনটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
এফএ/এমএস