বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চান এমপিকন্যা ডরিন
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ২৪ মে ২০২৪
‘আমি আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে আমি তাকে দেখে একটু বুঝতে চাই। একজন মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে? আমাদের ইসলামে আছে মরদেহকে ধীরে ধীরে গোসল করাও। ধীরে ধীরে কাপড় পরাও। সে যেন ব্যথা না পায়। আর যেভাবে আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরো করা হয়েছে, আমি জীবনেও ভুলতে পারবো না।’
শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নিহত এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের বাসার সামনে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
ডরিন বলেন, ‘ওপরে যদি আল্লাহ থাকে তাহলে আমার দীর্ঘ বিশ্বাস তিনি এর বিচার করবেন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য অনেকদিন ধরেই তারা পরিকল্পনা করেছে। তারা সাজিয়ে-গুছিয়ে নিয়েই এ ধরনের বড় একটা অপরাধ ঘটিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করেন কারা আছেন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে। যার নাম আসছে তাকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসেন। কান টানলে মাথা আসবে। যদি তার ওপরেও কেউ থেকে থাকে তার নামটিও খতিয়ে দেখেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত করে বিষয়টি দেখুন। রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক যেটাই হোক না কেন বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।’
আরও পড়ুন
- এমপি আনার হত্যা: তিন আসামি ৮ দিনের রিমান্ডে
- যেভাবে এমপি আনারের খণ্ডিত লাশ নিয়ে বের হন আমানুল্লাহ-জিহাদ
- আনোয়ারুল আজীমের লাশের সন্ধানে সিআইডির তল্লাশি
- মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বাগানবাড়িতে মাঝরাতে বাজতো গান, ঢুকতো গাড়ি
নিজের বাবা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা কালীগঞ্জে এতটাই জনপ্রিয়তা ছিলেন তার জনপ্রিয়তা দেখেই তাকে আটকানোর জন্য তার নামে মিথ্যা মামলা-অপপ্রচার করা হয় একসময়। পরবর্তীতে এসব মামলা সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তার প্রমাণও আমাদের কাছে আছে।’
প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন জানিয়ে এমপিকন্যা ডরিন বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে। ধৈর্য ধরো, আমি সঙ্গে আছি। তিনি আমাকে বলেছেন, তুমি তোমার বাবার সন্ধান চেয়েছিলে; স্পেশাল ফোর্স পাঠিয়ে আমি তোমার বাবাকে খুঁজে দিয়েছি। আমি আর কী করবো বলো! আমি খুঁজে দিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করছে। রিপোর্ট এলে আমি পদক্ষেপ নেবো।’
গত ১২ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার চিকিৎসার জন্য দর্শনার গেদে বন্দর দিয়ে ভারতের কলকাতায় যান। পরে ২২ মে তার হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছান। এসময় আশপাশ থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা আনারের বাসার সামনে উপস্থিত হন এবং ডোরিনের সঙ্গে কথা বলেন।
এমপি আনারের বাল্যবন্ধু গোলাম রসুল বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরে যা বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারছি, তার খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছে দীর্ঘ দুই তিনমাস ধরে। পরিকল্পনা করে তাকে সুকৌশলে নিয়ে গিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে ‘
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে দাবি, যেকোনো মূল্যে শাহীনকে (বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহীন) যদি ধরে এনে আইনের আওতায় আনা যায়, তাহলে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তৃণমূল পর্যন্ত কারা জড়িত আছে সবকিছু বের হয়ে আসবে।’
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/এমএস