নরসিংদীতে প্রার্থীকে পিটিয়ে হত্যা
১৫ বছর পর বাবা হচ্ছিলেন সুমন মিয়া, দেখা হলো না অনাগত সন্তানের মুখ
দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাবা হতে যাচ্ছিলেন রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া। দুদিন পরই দেখতেন অনাগত সন্তানের মুখ। তবে স্বর্গীয় সে মুহূর্তের ছোঁয়া পেলেন না তিনি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার সমর্থকদের হামলায় নিহত হয়েছেন তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া।
বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন রাজিব সুমন মিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
নিহত সুমন মিয়া রায়পুরা উপজেলার চরসুবদ্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের সমর্থক ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য রায়পুরার চরাঞ্চলে যাচ্ছিলেন সুমন মিয়া। তার গাড়িবহর চরাঞ্চলের পাড়াতলী ইউনিয়নের মিরেরকান্দি এলাকায় পৌঁছালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকদের মুখোমুখি হয়। এসময় আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা সুমনের গাড়িবহরে হামলা চালান। তারা সুমনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন। তখন উভয় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। তখন প্রাণে বাঁচতে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন তার গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেন।
এসময় রুবেল সমর্থকরা তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। সুমন দৌড়ে বাশঁগাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসত মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সুমনের সঙ্গে থাকা তার চাচাতো ভাই টিটু বলেন, নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারণায় যাওয়ার সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালান। তারা সুমনকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করেন। পরে তিনিসহ আমাদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। পরে সুমনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। আমি রুবেলের বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল রায়পুরার চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ী ও ভূমিদস্যু। সুমনের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিতে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ও তার সমর্থকদের হামলা-সংঘর্ষে সুমন মিয়া নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। হামলার সময় তিনি প্রাণ বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের খবর আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সঞ্জিত সাহা/এসআর/এমএস