বগুড়ায় বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ১২:০০ এএম, ১৫ মে ২০২৪

বাড়িতে ডেকে নিয়ে আলী হাসান (৩০) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তারই বন্ধু। মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া সদর উপজেলার ফাঁপোড় ইউনিয়নের শহরদিঘী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বন্ধু সবুজ সওদাগর পলাতক।

নিহত আলী হাসান বগুড়া শহরের মালগ্রামের জিন্নাহ প্রামাণিকের ছেলে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত আলী হাসান ও সবুজ সওদাগর ২০২১ সালে ফাঁপোড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর ইসলাম রকি হত্যা মামলার আসামি। এছাড়াও সবুজ সৈনিক লীগ নেতা রেহান হত্যা মামলারও আসামি। তার বিরুদ্ধে মাকদসহ আরও একাধিক মামলা আছে।

অন্যদিকে হত্যার শিকার আলী হাসানের বিরুদ্ধে ওই আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলাসহ মাদকের তিনটি ও মারামারির আরও দুইটি মামলা আছে।

ফাঁপোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, সবুজ সওদাগর নিজ বাড়িতে মাদকের ব্যবসা করতেন। এ নিয়ে প্রশাসনকে অবহিতও করা হয়েছিল। সেখানে প্রতিদিনই নিহত আলী হাসানের যাওয়া আসা করতেন। আজও তিনি একটি পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে সবুজের বাড়িতে আসেন। বিকেল তিনটার দিকে নিজ বাড়িতে সবুজ তার বন্ধু আলী হাসানের সাথে মাদকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বাকবিতণ্ডতায় জড়িয়ে পড়ে ছুরিকাঘাত করেন।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে সবুজ তার স্ত্রী ও শ্যালিকার সহযোগিতায় আলী হাসানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে সুযোগ বুঝে তারা সটকে পড়েন। বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী হাসানের মৃত্যু হয়।

নিহত আলীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অটোরিকশাচালক মো. সনি বলেন, এক ব্যক্তি বাড়ির মধ্যে দুর্ঘটনায় আঘাত পেয়েছেন জানিয়ে তার ভাই পরিচয়ে আহতকে অটোরকিশায় উঠিয়ে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই সময় সঙ্গে দুইজন নারীও ছিলেন। হাসপাতালে আসার পর তারা তিনজনই সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান। পরে জানতে পারি যাকে হাসপাতালে এনেছি তিনি ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন।

আলী হাসানের বাবা জিন্নাহ প্রামানিক বলেন, আমরা জানি আমার ছেলে সবুজের সাথে ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে। এজন্য তার সাথে সব সময় উঠা বসা করতো। পুলিশ বাড়িতে ছেলের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। কি থেকে কি হয়েছে জানি না। ছেলের হত্যার বিচার চাই।

শহরদিঘী গ্রামের বাসিন্দা সুজন ইসলাম বলেন, সবুজের বাড়িতে আলী হাসান প্রতিদিনই যাওয়া আসা করতো। দীর্ঘদিন ধরে তারা মাদকের কারবারি করেন। আজ দুপুরে আলী হাসান সবুজের বাড়িতে আসার পর থেকে ঝামেলা শুরু হয়। পরে জানতে পারি আলীকে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে সবুজ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সবুজের বাড়িতে আলী হাসান নিয়মিত যাওয়া আসা করতেন ও তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে। তবে হত্যার কারণ তদন্তে জানা যাবে। জড়িত সবুজ ও তার পরিবারের সদস্যদের আটকে অভিযান চলছে। নিহত আলী হাসানের বুকের ডান পাশে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এতে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।