শহরের বুকে ঘোড়ার ঘানি দেখতে মানুষের ভিড়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ১২ মে ২০২৪

দিনাজপুর শহরে ঘোড়া দিয়ে ঘোরানো হচ্ছে ঘানি। বিলুপ্তপ্রায় এই তেলের ঘানি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ। এই তেলের ঘানির দেখা মিলছে শহরের গোর-এ শহীদ ময়দানের দক্ষিণে নতুন স্টেশন ক্লাবের পাশে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের সামনে রাস্তার ধারে।

জানা যায়, সারাদেশে তেলের ঘানি ঘোরানো হয় গরু দিয়ে। সেটাও এখন আর সচরাচর চোখে পড়ে না। অনেকে এখনো বাপ দাদার পেশা হিসেবে এই পেশাকে ধরে রেখেছেন। তবে ভেজালের এই যুগে এসে অনেকে সয়াবিনের পরিবর্তে নির্ভেজাল সরিষার তেল খাদ্য তালিকায় যুক্ত করেছেন। সেখানে আবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে ঘানিতে পিষা খাঁটি সরিষার তেল। আর এতেই যুক্ত হচ্ছে যন্ত্রচালিত কিংবা গরু বা ঘোড়া চালিত ঘানি।

বিভিন্ন হাট বাজারে যান্ত্রিক ঘানি চোখে পড়লেও গরু কিংবা ঘোড়া দিয়ে তৈরি কাঠের ঘানি খুব একটা চোখে পড়ে না। এরইমধ্যে শহরের গোর-এ শহীদ ময়দানের দক্ষিণে নতুন স্টেশন ক্লাবের পাশে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের সামনে রাস্তার ধারে চোখে পড়ছে ঘোড়ার এই ঘানি। এই ঘানিতে উৎপাদিত তেলের চাহিদাও ব্যাপক। উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার তেলের জন্য অগ্রীম টাকাও দিয়ে যাচ্ছেন।

শনিবার (১১ মে) বিকেল ৫টার সময় কথা হয় ঘানির মালিক মো. মোকাররম হোসেনের সঙ্গে। তিনি পেশায় একজন গাড়িচালক ছিলেন। বয়সের কারণে এখন আর গাড়ি চালাতে পারেন না। তাই কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। পরে তিনি তার দাদার পেশা তেলের ঘানি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিজের বাড়িতে জায়গা না থাকায় শহরের ওই সরকারি জায়গায় ঘানিটি স্থাপন করেন। গরুর দাম বেশি হওয়ায় ঘোড়া দিয়ে ঘানি চালাতে শুরু করেন তিনি।

শহরের বুকে ঘোড়ার ঘানি দেখতে মানুষের ভিড়

শুরুতেই ব্যাপক সাড়া পড়েছে বলে জানান তিনি। উৎপাদিত সরিষার তেল সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। হাজারো মানুষ তেলের ঘানি দেখার জন্য ভিড় করছে। এতে তিনিও বেশ খুশি। তবে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের এক নেতা তার এই ঘানি বন্ধ করতে বলে গেছেন বলে জানান তিনি।

ঘানি থেকে তেল নিতে আসা মো. মিলন হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি আগে কখনো তেলের ঘানি দেখেননি। এই প্রথম দেখলেন। তিনি এক লিটার তেল ৪০০ টাকায় কিনেছেন।

তিনি বলেন, নিজে বসে থেকে দেখলাম কিভাবে ঘানি থেকে বিশুদ্ধ তেল তৈরি হয়। দাম একটু বেশি হলেও বিশুদ্ধ তেল পেয়ে খুশি লাগছে।

আরেক ক্রেতা মোস্তাকিম বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মানুষের ভিড় দেখে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম ঘোড়া দিয়ে তেলের ঘানি চালানো হচ্ছে। ছোট বেলায় গ্রামে গরু দিয়ে তেলের ঘানি ঘোরাতে দেখেছি। এই প্রথম ঘোড়া দিয়ে ঘানি ঘোরাতে দেখে শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। এত লিটার তেল নিলাম, দারুণ ঘ্রাণ। মানুষ মনে হচ্ছে আগের যুগে ফিরে যাচ্ছে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।