অফ সিজনে শসার ফুলের মধুতে মেতেছেন মৌচাষিরা

এমদাদুল হক মিলন এমদাদুল হক মিলন , দিনাজপুর দিনাজপুর
প্রকাশিত: ১২:০৪ পিএম, ১২ মে ২০২৪

চলতি বছর মধু উৎপাদনের মৌসুম শেষ হলেও দিনাজপুরে অফ সিজনে শসা ফুলে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন মৌচাষিরা। শসা ফুল থেকে মধু আহরণে সফলতা পেয়েছেন দিনাজপুরের তরুণ মৌ খামারি রাকিব হাসান রিফাত। এরইমধ্যে তিনি শসা ফুলের মধু আহরণ করে বাজারজাত করতে শুরু করেছেন।

সরিষা, লিচু, কালোজিরাসহ সব ধরনের ফুল থেকে মধু আহরণ শেষে এ সময়টাতে অলস সময় পার করেন মৌ খামারিরা। এ সময় তারা বাইরে থেকে খাবার দিয়ে মৌমাছিদের বংশ বিস্তার ও তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে।

অফ সিজনে শসার ফুলের মধুতে মেতেছেন মৌচাষিরা

গত তিন বছর ধরে মধু নিয়ে কাজ করছেন মৌ খামারি রাকিব হাসান রিফাত। তিনি এবারই প্রথম অফ সিজনে সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের পলি এলাকায় শসার ক্ষেতে শসার ফুল দেখে তার ২৬টি মৌ বাক্স স্থাপন করেন। গত সোমাবার তিনি সেই বাক্স থেকে মধু আহরণ করেছেন। তিনি ২৬টি বাক্স থেকে প্রায় ৪৫ কেজি মধু পেয়েছেন।

তার সফলতা দেখে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার মৌ খামারিরা শসা, করলা, মিষ্টি কুমড়াসহ মিশ্র ফুলের মাঠে সারি-সারি মধু বাক্স স্থাপন করেছেন। এখন আর মৌ খামারি ও মৌমাছিকে অলস সময় পার করতে হবে না।

অফ সিজনে শসার ফুলের মধুতে মেতেছেন মৌচাষিরা

তরুণ মৌ খামারি রাকিব হাসান রিফাত বলেন, তার এলাকায় ব্যাপকহারে রবি শস্য চাষ হয়ে থাকে। এবার তিনি সরিষা, লিচু ও কালোজিরার পর ফুল দেখে পরীক্ষামূলকভাবে শসা ক্ষেতে মৌ বাক্স স্থাপন করেন। মৌবাক্স স্থাপনের ১৫ দিন পর তিনি হারভেস্ট করতে পেরেছেন। ভালো মধুও পেয়েছেন। এসব মধুর সুন্দর ঘ্রাণ ও মিষ্টি। তিনি বাজারে ৫০০ টাকা কেজি দরে শসা ফুলের মধু বিক্রি করেছেন। এতে করে মৌমাছিকে আর আলাদা খাবার দিতে হচ্ছে না এবং মধু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। তার দেখাদেখি এখন অনেকে মিশ্র রবি শস্যের বাগানে মৌবাক্স স্থাপন করছেন।

অফ সিজনে শসার ফুলের মধুতে মেতেছেন মৌচাষিরা

দিনাজপুর জেলা বিসিক মৌ বিভাজন সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, দিনাজপুর মৌ শিল্পের জন্য একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানে যেমন রয়েছে সরিষার মাঠ তেমনি রয়েছে ব্যাপকহারে লিচু বাগান। এবার সরিষা লিচুর ফুল ছাড়াও নতুন একটি সম্ভবনার দ্বার খুলেছে সবজির ফুলের মধু সংগ্রহ। তরুণ উদ্যেক্তা রাকিব হাসান রিফাত এবার শসা ফুলের মধু উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন। এই মধু স্বাদে গুণে মানে অনন্য।

দিনাজপুর জেলা বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক জাহেদুল ইসলাম বলেন, এ জেলায় মৌ চাষের বিভিন্ন ট্রেনিং দিয়ে থাকি। অনেক উদ্যোক্তা তৈরি করেছি। এই উদ্যেক্তারা তাদের খামার মাইগ্রেশন করে মধু উৎপাদন করে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় এই বছর একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দিনাজপুরে পল্লি অঞ্চলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে শসা আবাদ হয়েছে। এই শসা ফুল থেকে মধু উৎপাদন হয়েছে। এর কারণে এখন আর মৌ খামারিদের অলস সময় পার করতে হবে না। এমনকি মৌমাছিকে নিয়ে চিন্তাও করতে হবে না।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।