মামলা জটিলতায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার নৌকা

শরীফুল ইসলাম শরীফুল ইসলাম , চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৫১ এএম, ০৭ মে ২০২৪

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় অভিযানে জেলেদের কাছ থেকে ৬০টি নৌকা জব্দ করে টাস্কফোর্স। আনুমানিক প্রায় কোটি টাকা মূল্যের এসব নৌকা এখন পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। মামলাসহ বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলেই কেবল জেলেরা তাদের নৌকা ফিরে পাবেন।

সোমবার (৬ মে) সকালে শহরের মাদরাসা রোডে লঞ্চঘাটের দুই পাশে অভিযানে জব্দকৃত নৌকাগুলো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

মামলা জটিলতায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার নৌকা

মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকায় জেলা টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অবৈধভাবে নদীতে মাছ ধরতে আসা জেলেদের হাতেনাতে আটক ও তাদের হেফাজতে থাকা নৌকা জব্দ করা হয়। দুই মাসে আটক তিন শতাধিক জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা করা হয়। এ সময় জেলেদের সঙ্গে থাকা জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং নৌকা মামলার আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ।

চাঁদপুর শহরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকার জেলে রমজান আলী, ইছহাক ও মহসীন মিয়া বলেন, আমরা গোপনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নেমে মাছ ধরেছি। যে কারণে দুই মাস জেল খাটতে হয়েছে। জেল থেকে বের হয়ে দেখি আমাদের নৌকাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আদালত যদি কম সময়ের মধ্যে আমাদেরকে নৌকাগুলো নেওয়ার নির্দেশ দেন তাহলে নিতে পারবো। বর্তমানে কিছু নৌকা ভেঙে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে।

চাঁদপুর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, জাটকা রক্ষার এবারের অভিযান খুবই কঠোর এবং সফল হয়েছে। অভিযানে অনেক জেলে আটকসহ জাল, জাটাকা ও নৌকা জব্দ হয়েছে। এর মধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযানে এবং নৌপুলিশের অভিযানেও মাছ ধরার নৌকা জব্দ হয়। সব বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে। জব্দ নৌকার বিষয়ে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলা জটিলতায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার নৌকা

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, গত দুই মাসের মৎস্য অভিযানে যেসব নৌকা জব্দ করা হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী আইনানুগ নিষ্পত্তির জন্য কার্যক্রম চলমান আছে। এর মধ্যে আদালতের নির্দেশক্রমে কিছু নৌকা মালিক ফেরত পেয়েছেন। বাকিগুলো সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান আছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসন বলেন, এ বছর দুই মাসের অভিযানে জেলা টাস্কফোর্স ৬০টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করে। এসব নৌকা বর্তমানে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। জেলা টাস্কফোর্স নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব নৌকা নিলামে বিক্রি করবে। আর নৌ পুলিশের হেফাজতে থাকা নৌকা আদালতের নির্দেশের পর মালিক নিতে পারেন।

এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।