গভীর রাতে ২৩ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগসহ প্রার্থী আটক
ভোটের একদিন আগে গভীর রাতে প্রায় ২৩ লাখ টাকাসহ আটক হয়েছেন পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহীন। তাকে সুজানগরের চর ভবানীপুর মুজিব বাঁধের ওপর থেকে আটক করেন র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের সদস্যরা। তিনি সেখানে টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
এ সময় ওই প্রার্থীর ১১ সহযোগীকেও আটক করা হয়েছে। র্যাব ১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক শাহিনুজ্জামান শাহীন পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী। তিনি পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাবা সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আবুল কাশেম সরদার। আটকদের মধ্যে সুজানগর পৌরসভার ৪ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রয়েছেন। অন্যদের নাম জানা যায়নি।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার এহতেশামুল হক খান মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে জানান, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য র্যাব সদস্যরা নিয়মিত টহলদারিতে ছিল। সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সুজানগর বাজারের পাশে চর ভবানীপুর এলাকায় টহল দেওয়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনকে দুই ব্যাগ ভর্তি টাকাসহ আটক কর হয়। এতে মোট ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা ছিল। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ১১ সহযোগীকেও আটক করা হয়।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার জানান, আটক শাহিনুজ্জামান শাহীন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন ভোটারদের তার দিকে প্রভাবিত করতেই টাকাগুলো নেওয়া হয়েছিল। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীনের ব্যবহৃত একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার আরও জানান, আটকদের র্যাবের পাবনা র্যাব ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
তিনি জানান, আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি এসে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে শাহীনের আটকের খবর পাওয়ার পর থেকেই তার সমর্থকরা সুজানগর থানার সামনে অবস্থান নেন এবং তার মুক্তির দাবি জানান।
তার বড়ভাই ও সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। যারা বুঝতে পেরেছে ভোটের মাধ্যমে শাহীনকে পরাজিত করা সম্ভব নয়, তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকরা সুজানগর থানার পাশে রাস্তায় অবস্থান করছেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
পাবনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮ মে পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আনারস প্রতীকের শাহীনুজ্জামান শাহীনের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল)।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/জিকেএস