গ্যাস পাচ্ছেন গোপালগঞ্জবাসী
গোপালগঞ্জবাসী পাচ্ছেন লাইনের গ্যাস। পায়রা বন্দরের গভীর সমুদ্র থেকে অর্থাৎ কুয়াকাটা থেকে বরগুনা, ঝালকাঠি, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট হয়ে খুলনায় পর্যন্ত যাবে এ গ্যাস পাইপলাইন। তবে এ গ্যাস বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা যাবে না। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার রাধাগঞ্জে প্রস্তাবিত ২০০ একর জমির ওপরে নির্মিত ইকোনমিক জোনে শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা হবে এ গ্যাস।
জেলার অন্যান্য স্থানে গড়ে ওঠা কলকারখানা চাহিদামাফিক এ গ্যাস ব্যবহার করে স্বল্পমূল্যে পণ্য উৎপাদন করতে পারবে। সেইসঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের বেকারত্ব দূর হবে। অর্থেনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটবে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে মানুষের।
রোববার (৫ মে) বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী মাহবুবুল আলম।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুন্সী আতিয়ার রহমান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফারহানা জাহান উপমা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সিহাব উদ্দিন আজমসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সংগঠনের পরিচালক মোক্তারুজ্জামান, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ মো. ফয়সাল, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইয়ার উদ্দিন মো. আওরঙ্গজেব প্রকল্প বিষয়ে অবহিত করেন।
গোপালগঞ্জে গ্যাস আসার খবরে খুশি জেলার সর্বস্তরের মানুষ। জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মোশারেফ হোসেন শেখ, টুঙ্গিপাড়া মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, কোটালীপাড়া মেয়র মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, গ্যাস এলে নতুন নতুন কল-কারখানা চালু হবে। এতে এ অঞ্চলের মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। বেকারত্ব কমবে। এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ অতিক্রমকারী পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। পাইপলাইনটি জেলার তিন উপজেলা দিয়ে অতিক্রম করবে। উপজেলাগুলো হলো গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গীপাড়া। যেসব ইউনিয়ন ও মৌজা দিয়ে গ্যাস পাইপলাইন অতিক্রম করবে সেগুলো হলো
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের খাটরা মৌজা, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বোড়াশী ও তেঘরিয়া মৌজা, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোবরা মৌজা, গোবরা ইউনিয়নের পোদ্দারের চর মৌজা এবং রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সিলনা ও দীঘারকুল মৌজা।
কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া, হিজলবাড়ি ও তালপুকুরিয়া মৌজা। টুঙ্গীপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের বালাডাঙা, বড় সিঙ্গিরপাড়া ও টুঙ্গীপাড়া মৌজা, বর্নি ইউনিয়নের বর্নি মৌজা, ডুমুরিয়া ইউনিয়নের ভৈরব নগর ও সালুখা মৌজা এবং গোপালপুর ইউনিয়নের গুয়াধানা মৌজা। এসব মৌজা থেকে জমি অধিগ্রহণ ও অধিযাচনের মোট পরিমাণ যথাক্রমে ৬২.৬৩৪ একর ও ১১৭.৪৮৬ একর।
আগামী তিন বছরের মধ্যে এ গ্যাসলাইন স্থাপনের কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এসআর/জেআইএম