নাটোরে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ইউএনও অফিসের কর্মাচারী বরখাস্ত
নাটোরের সিংড়ায় নবীন আলী নামে ১২ বছরের এক শিশুকে মারপিটের ঘটনায় রাসেল সরদার ওরফে রুবেল (৩৫) নামে মাস্টাররোলে কর্মরত এক কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
ঘটনাটি জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা শুক্রবার (৩ মে) রাসেলকে বরখাস্ত করেন। পরে ফেসবুকে এ সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার শিশু নবীন উপজেলার নিগইন এলাকার আব্দুস সালাম ও আশেদা বেগম দম্পতির ছেলে। সে নিগইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
অপরদিকে অভিযুক্ত রাসেল একই এলাকার বেলাল সরদারের ছেলে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা।
ভুক্তভোগী নবীন আলীর মা আশেদা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নবীন দোকান থেকে হাতে টর্চলাইট নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় মাথায় করে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় পথ চলার সুবিধার্থে শ্রমিকরা নবীনকে টর্চের আলো জ্বালাতে বলেন। এ সময় নবীন টর্চের আলো জ্বালালে তা সমানে থাকা রাসেলের চোখে পড়ে। এতে রাসেল ক্ষিপ্ত হন। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাসেল শিশু নবীনকে কিল, ঘুষ, চড় ও লাথি মেরে রক্তাক্ত জখম করেন।
পরে আশেদা বেগম ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাসায় নিয়ে যান। এই ঘটনায় আশেদা বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দেন। এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে রাসেল তাদেরকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন বলে দাবি করেন আশেদা বেগম। এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাসেল সরদারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা জানান, ঘটনাটি জানার পর অভিযুক্ত রাসেলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সিংড়া থানার ওসি আবুল কালামকে রাসেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে ফেসবুকে ইউএনও সিংড়ার নিজস্ব ওয়ালে এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে। তিনি জানান, রাসেলকে করোনাকালীন সময় অতিরিক্ত মাস্টার রোলে অনেকটা মজুরি ভিত্তিক শর্তে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নয়। উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত অন্যান্য কর্মচারী যাতে কোনো অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, এই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের অধীনে বিচারাধীন।
রেজাউল করিম রেজা/এফএ/এমএস