দুই লাখ টাকার বিলে ৮০ হাজার ঘুস দাবি, ভিডিও ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আমজাদ হোসেন (বামে) ও অফিস সহকারী মমতাজ বেগম

কক্সবাজারের চকরিয়া হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার নামে সমাজ সেবা থেকে এক লাখ ৯২ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা পেতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন ও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম দাবি করেছেন ৮০ হাজার টাকা। টাকা না দিলে অনুদান বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এতিমখানার পরিচালক নগদ ৪০ হাজার টাকা মমতাজকে হস্তান্তর করেন। বাকি টাকা অনুদান পেলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে শুধু এতিমখানা নয়; বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি বই পেতে উপকারভোগীর কাছ থেকে ২-৩ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ওই দুজনের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম।

অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতবছর চকরিয়ায় ভিক্ষুকদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করার জন্য আমাদের কাছ থেকে অফিস খরচ হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। কিন্তু আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। অথচ এর কিছুদিন আগেও আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। একই বছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের এক লাখ ৯২ হাজার টাকার বিল জমা দিলে আমাকে বিল দেবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতাজ বেগম ও আমজাদ হোসেন।’

তিনি বলেন, ‘বিল পেতে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করি। দেন দরবারে একপর্যায়ে ৮০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হলে আমাকে চেক দেন। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল দুপুরে সমাজসেবা অফিসে গিয়ে অফিস কক্ষে মমতাজ বেগমকে ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিই। বাকি ৪০ হাজার টাকা দ্বিতীয় কিস্তির বিল উত্তোলনের পর দেবো বলে ম্যানেজ করি।’

‘বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন এ দুজন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির ভয়ে মুখ খুলে প্রতিবাদ করেননি কেউ। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতা বই নিতে গেলেও উপকারভোগীর কাছ থেকে ২-৩ হাজার টাকা ঘুস আদায় করতেন আমজাদ হোসেন ও মমতাজ বেগম’, বলেন ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসের অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম বলেন, একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে। টাকাগুলো আমার স্বামী বিদেশ থেকে পাঠিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে আরও নিখুঁত প্রমাণ লাগবে।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। মমতাজ বেগমের সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি বলেও দাবি করেন।

এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসান মাসুদকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে বক্তব্যের বিষয় জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠানো হলেও উত্তর দেননি।

সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।