গণডাকাতি
যশোরে একজনের ৪৬ বছর ও দু’জনের ৩৯ বছর কারাদণ্ড
যশোরের অভয়নগরের আন্দাগ্রামের হিন্দুপাড়ায় গণডাকাতি মামলায় একজনের ৪৬ বছর ও অপর দু’জনের ৩৯ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) স্পেশাল জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দেন। স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সাকো গ্রামের সোহরাব হোসেন, যশোরের মণিরামপুরের কাশিপুর গ্রামের বাচ্চু ও খুলনার তেরখাদার ইন্দুহাটা গ্রামের শহিদুল ইসলাম শামীম। সাজাপ্রাপ্ত তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৩ জুলাই দিবাগত রাতে অভয়নগরের আন্দাগ্রামের হিন্দু পাড়ায় একদল ডাকাত হানা দেয়। ডাকাতরা সুধির কুমার মল্লিক ও তার ছেলে সুরঞ্জিত মল্লিক, ছোট ভাই দিপ্ত কুমার, মেঝ ভাই মৃনাল কান্তি, সমর কান্তিসহ প্রতিবেশী কয়েক বাড়িতে গিয়ে বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার গহনা, মোবাইল ফোনসহ পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন সুধির কুমার মল্লিক বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে ডাকাতির মামলা করেন।
মামলার তদন্তকালে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বাচ্চু মিয়াকে আটক ও তার দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী আরও কয়েকজনকে আটক ও ডাকাতি হওয়া কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে পাঁচ জনকে অভিযুক্ত, বিভিন্নি সময় আটক ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ১১ জনের অব্যাহতি চেয়ে ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ডাতাকির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামি সোহরার হোসেনকে ৩৯৫ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড, ৩৯৭ ও ৪১২ ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অর্থাৎ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে ৩২ বছর ও দুইটি ধারায় ১৪ বছর করে সর্বমোট ৪৬ বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
এছাড়া বাচ্চু ও শাহিদুল ইসলাম শামীমকে ৩৯৫ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৯৭ ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ দু’জনের সর্বমোট ৩৯ বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ মামলার অপর দুই আসামি ইমামুল কবির ওরফে জীবন ওরফে কদর ওরফে শবে কাদীর ও বিপুল ওরফে বিপ্লব ওরফে কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ে সাজা একইসঙ্গে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম