ধর্মমন্ত্রী

বাঙালির ঐতিহ্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০৮:২৯ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, আবহমানকাল ধরে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। এ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে। এই সম্প্রীতি যেন নষ্ট না হয় এ বিষয়ে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্য ছিলো একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা যেখানে আইনের শাসন ও মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। প্রতিষ্ঠিত হবে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এমন বাংলাদেশ, যা হবে ধর্মনিরপেক্ষ একটি রাষ্ট্র।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিন্দু কল্যাণ ট্রাষ্টের আয়োজনে ময়মনসিংহের টাউন তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে বিভাগীয় পুরোহিত ও সেবাইত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় সমাজ গঠনে ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমাজে সকল ধর্মের মানুষের কাছেই তাদের নিজ ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সমাজের অধিকাংশ মানুষ তাদেরকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে, সম্মান করে। তাদের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলে। এই শ্রেণির মানুষগুলোকে আমরা যদি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারি তাহলে দেশ ও জাতি অনেক বেশি উপকৃত হতে পারে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুরোহিত ও সেবাইতদের উদ্দেশ্যে ধর্মমন্ত্রী বলেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজে যে সকল সামাজিক ব্যাধি রয়েছে বিশেষ করে ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, মাদকাসক্তি, দুর্নীতি, ভেজাল, মজুতদারীর মতো ব্যাধি প্রতিরোধেও আপনারা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিত ও সেবাইতদেরকে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা সম্ভব হলে একদিকে যেমন অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে, অন্যদিকে সামাজিক সমতার ক্ষেত্রেও উন্নতি ঘটবে। এছাড়া যথাযথ ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি তাদের মধ্যে দেশপ্রমের বিকাশ ও সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা সম্ভব হলে দেশ ও জনগণের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হবে। জাতীয়তা ও ভাতৃত্ববোধ দৃঢ় ও অটুট হবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বেগবান হবে।

জানা যায়, ধর্মীয় ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর অধীনে এ সম্মেলনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সাতটি জেলার পুরোহিত ও সেবাইতরা অংশ নেন।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে এ প্রশিক্ষণ দারিদ্র্য বিমোচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে পুরোহিত ও সেবাইতদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে দেশের বেকার যুবক-যুবতীরা এখানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

এছাড়া পুরোহিত ও সেবাইতরা ভাতাপ্রাপ্তির মাধ্যমে তারা আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন। ফলে দারিদ্য বিমোচনে প্রকল্পটি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলেও জানান আয়োজকরা।

সম্মেলনে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মেদ ভূঞা, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর শিখা চক্রবর্তী, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ইঞ্জিনিয়ার রতন কুমার, অঙ্কন কর্মকার, উত্তম চক্রবর্তী রকেট, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিকাশ রায় প্রমুখ।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এনআইবি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।