‘৮ মে অন্য মার্কার এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকতে দেবো না’
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী ব্যতীত অন্য প্রার্থীর এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঢুকলে হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। এছাড়াও হানাহানির চেষ্টা করা হলে দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। যাদের দাঁত নেই, তাদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেওয়া হবে বলে বক্তব্য দিয়েছেন সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত থেকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মিছিল পরবর্তী এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম।
অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদকে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদের জবান আমরা বন্ধ করে দেবো। আমরা আগামী ৮ মের নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকবো, আমরা অন্য কোনো মার্কার কোনো এজেন্ট দিতে দেবো না। রফিক সাহেবকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আজকেই ঘোষণা দিলাম।’
তিনি প্রতিপক্ষের লোকদের হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘সাবধান হয়ে যান, আমাদের মাঝে অসন্তোষ ও হানাহানির চেষ্টা করবেন না। আপনাদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। যাদের দাঁত নেই, তাদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেওয়া হবে।’
এছাড়াও পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় একই সভায় বলেন, ‘অন্য কোনো মার্কার এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে দিতে দেবো না। এজেন্ট দিলে তার হাত বাড়ি দিয়ে ভেঙে আমরা যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করবো।’
বক্তব্যের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ব্যাপারে মন্তব্যের প্রয়োজন নাই, আমরা যা বলছি, বলছিই। অনলাইনে যেহেতু দেখছেন- বলে ফেললে তো আর কিছু করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই বক্তব্যের আগে আরও কথা বলেছি। সরকারে আওয়ামী লীগ, এমপি আমাদের। সামস উদ্দিন এবং অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ্ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে রফিকুল ইসলামকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, তাদের অভিনন্দন। পিংনা বাজারে খাজনা মওকুফ করা হয়েছে, সৌন্দর্যবর্ধন ও অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হচ্ছে। এসব কাজে যারা বাধা দেবে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়ের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী ছিলেন। এরমধ্যে পোগলদিঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন এবং জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল্লাহ্ নানা নাটকীয়তার পর তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। শেষ পর্যন্ত রফিকুল ইসলাম (আনারস) ও তালেব উদ্দিন (দোয়াতকলম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মো. নাসিম উদ্দিন/এফএ/এএসএম