কাপ্তাই লেকে পানি কমে নৌ চলাচল ব্যাহত

সাইফুল উদ্দীন সাইফুল উদ্দীন রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

শুষ্ক মৌসুমে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নেমে আসায় নৌযান চলাচলে বেশ অসুবিধায় পড়েছেন চালক এবং যাত্রীরা। বিশেষ করে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি রোড ও বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি থেকে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার নৌপথে পানির স্তর এতই নিচে গেছে যে অনেক জায়গায় ছোট ছোট বোট দিয়ে চলাচলরত যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বোট টেনে নিয়ে যেতে হচ্ছে। লেকের অনেক জায়গায় হাঁটুর নিচেও পানি নেমে গেছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিলাইছড়ি উপজেলার ১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন এবং ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই অংশে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর এতই কমে গেছে যে ছোট বোট থেকে যাত্রীদেরকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। চালক ও যাত্রীরা একসঙ্গে বোট টেনে নিয়ে ওই অংশটুকু পার করছেন।

শুধু কেরংছড়ি এলাকা নয়, এই নৌপথে কেংড়াছড়ি, গাছকাটাছড়া, বিলাইছড়ি সদরসহ অনেক জায়গায় পানির স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বড় বোটের পরিবর্তে ছোট ছোট বোট দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের।

এই নৌপথে চলাচলকারী যাত্রী বিলাইছড়ি উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার নিরালা চাকমা জানান, বিশেষ করে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে যাওয়ায় আমাদের চলাচলে বেশ অসুবিধা পোহাতে হয়। অনেক জায়গায় বোট থেকে নেমে নিজেরা টেনে নিয়ে ওই অংশটুকু পার করি।

যাত্রী রবিন তঞ্চংগ্যা বলেন, এই শুষ্ক মৌসুমে নৌ চলাচলে আমাদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হ্রদের বেশ কিছু জায়গায় পানি কমে যাওয়ায় আমরা ঠিকভাবে চলাচল করতে পারি না। রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা ভোগ করতে হয়।

কাপ্তাই লেকে পানি কমে নৌ চলাচল ব্যাহত

বোটচালক জাহাঙ্গীর বলেন, বেশ কয়েকমাস ধরে লেকে পানি স্বল্পতায় আমরা স্বাভাবিক গতিতে বোট চালাতে পারছি না। চরে বোট আটকে যাচ্ছে। ওই স্থানগুলোতে পানিতে নেমে বোট টেনে আমাদেরকে নিয়ে যেতে হয়।

১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান বলেন, এই মৌসুমে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি ও রাঙ্গামাটি নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেখানে সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে সদর ইউনিয়ন এবং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের কিছু শ্রমিক দিয়ে লেকের মাটি অপসারণের মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি।

বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা জাগো নিউজকে বলেন, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে গত সোমবার থেকে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় কিছু শ্রমিক দিয়ে লেক থেকে মাটি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। অচিরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড এইসব জায়গায় ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে বলে আমরা আশা করছি।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।